নয়াদিল্লি: জিএসটি চালু করতে শুক্রবার সংসদের মধ্যরাতের বিশেষ অধিবেশন বয়কটের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার প্রশ্নই নেই বলে জানিয়ে দিলেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা আনন্দ শর্মা। তিনি বলেছেন, এটা এমন কোনও মামুলি বিষয় নয় যে, সরকার অনুরোধ করল আর অনুষ্ঠানের মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে একটা প্রধান বিরোধী দল তার সিদ্ধান্ত বদলে ফেলল। সংসদের রীতি-প্রথা, দেশের ঐতিহ্য মাথায় রেখে আমরা জিএসটি রূপায়ণ অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি জিএসটি রূপায়ণ অনুষ্ঠানটি সংসদের সেন্ট্রাল হলে করার জন্য কেন্দ্রের নিন্দা করে বলেন, এভাবে ওই কক্ষকে অপমান করা হচ্ছে, তাকে প্রচারের হাতিয়ারও করা হচ্ছে। ওরা যদি সেন্ট্রাল হলের বাইরে অনুষ্ঠান করতেন, আমাদের সম্মান দিয়ে ডাকতেন, তাহলে হয়তো যেতাম।

রাজনীতি নয়, আদর্শের কারণেই কংগ্রেস ওই অনুষ্ঠান বয়কট করছে বলে সওয়াল করেন তিনি।

শর্মা বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হল, পাকিস্তানি সেনারা আত্মসমর্পণ করে, কিন্তু ইন্দিরা গাঁধী সংসদের অধিবেশন ডাকেননি। পরীক্ষামূলক পরমাণু বিস্ফোরণ হল, ভারত মহাকাশে পা দিল, অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হল, এমন কত বড় ঘটনা ঘটল। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই যখন সংসদের অধিবেশন হয়নি, তখন এখনই বা কী দরকার?

শর্মা পাল্টা দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী বরং দেশবাসীকে বলুন, কেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠকে কেন এইচ ওয়ান বি ওয়ান ভিসা প্রসঙ্গ উঠল না। উনি মার্কিন সফরে যাওয়ার আগে আমরা অনুরোধ করেছিলাম আমেরিকায় যান যেসব তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী, তাঁদের স্বার্থ যেন উনি রক্ষা করেন, ওই ভিসার ইস্যুটি তোলেন কেননা ওরা দক্ষ কর্মী, তাই ওদের অভিবাসনকারী বলে গণ্য করা যায় না। কিন্তু উনি আমেরিকা থেকে ফিরলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে ভরসা করার কোনও আশ্বাস আদায় না করেই। কেন চুপ উনি? দেশবাসীকে জবাব দিতে দায়বদ্ধ উনি।

কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গাঁধী আবার জিএসটি রূপায়ণকে তামাসা বলে কটাক্ষ করেছেন। তিনি ছুটি কাটাচ্ছেন বর্তমানে। তবে দফায় দফায় আজ ট্যুইট-বিদ্ধ করেছেন কেন্দ্রকে।
তাঁর দাবি, কোনও আগাম পরিকল্পনা, দূরদৃষ্টি ছাড়াই, প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতি না নিয়েই তড়িঘড়ি জিএসটি বাস্তবায়িত করছে সরকার, যেমনটি হয়েছিল বিমুদ্রাকরণের সময়।







রাহুলের কটাক্ষ, এমন এক সংস্কার, যার বিপুল সম্ভাবনা ছিল, তাকে আধাখ্যাঁচড়া ঢঙে, শুধু আত্মপ্রচারের লক্ষ্যে প্রয়োগ করা হচ্ছে। অথচ, ভারতে এমনভাবে জিএসটি বাস্তবায়িত হওয়া উচিত ছিল যাতে কোটি কোটি সাধারণ মানুষ, ছোট ব্যবসায়ীদের অশেষ দুর্ভোগ, যন্ত্রণায় পড়তে না হয়।




রাহুল এও লিখেছেন, জিএসটি এমন এক সংস্কার যা কংগ্রেস শুরু থেকে সমর্থন করেছে, বিমুদ্রাকরণের সময় যা হয়নি। কিন্তু বিমুদ্রাকরণের মতোই জিএসটি কার্যকর করছে এক অপদার্থ, অ-সংবেদনশীল সরকার, কোনওরকম ভাবনা, দূরদৃষ্টি ছাড়াই।


প্রধান কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, আগের ইউপিএ সরকার কর হার ১৮ শতাংশে বেঁধে দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু বিজেপি সরকার যে জিএসটি হার চাপিয়ে দিল, গোটা বিশ্বে এযাবত্ যা হয়নি। বর্তমান সরকারের ৫ স্তরের কর কাঠামো সহ জিএসটি-র বোঝা চালু হলে ছোট দোকানদার, ব্যবসায়ীরা মার খাবেন।