নয়াদিল্লি: চিন নয়, ভারত থেকে নোভেল করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন নেওয়াই শ্রেয় বলে মনে করছে নেপাল। নানা ইস্যুতে নেপাল-ভারত বিবাদ চলছে। তার মধ্যেই চিনের দিকে ঝুঁকে থাকা নেপালের এহেন মনোভাব। সেদেশের বিদেশমন্ত্রী প্রদীপ গাওয়ালি নয়াদিল্লি এসেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে জয়েন্ট কমিশন বৈঠকে বসতে। তিনি যেসব অ্যাজেন্ডা নিয়ে এসেছেন, সেগুলির অন্যতম নেপালে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া সুনিশ্চিত করতে ভারতের সঙ্গে সরবরাহ চুক্তি করা।
সূত্রের খবর, ভারতে তৈরি ভ্যাকসিনই নেপালের মানুষের পক্ষে সবচেয়ে কার্যকর হবে, যেহেতু ভারত, নেপালের জলবায়ুগত সাদৃশ্য রয়েছে। ভ্যাকসিন মজুত, সরবরাহের কাজও সহজ হবে ভারত থেকে নিলে।
কিন্তু চিন থেকে ভ্যাকসিন নেওয়ার কথা কেন ভাবা হচ্ছে না? নেপালের একটি সূত্রের খবর, তা বাস্তবসম্মত নয়, আর্থিক দিক থেকেও সাশ্রয়কর হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রটি বলেছে, শেষ পর্যন্ত নেপালে ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচির ব্যাপারে সেই ভারতেরই মুখাপেক্ষী হতে হবে আমাদের। আমরা ভ্যাকসিন পাব, এটাই ভারতের কাছে প্রত্যাশা আমাদের। ভারতের কাছে আমরা এ ব্যাপারে ইতিবাচক সহযোগিতার আশা করছি।
নেপাল প্রাথমিকভাবে ১২ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন চেয়েছে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সামনের সারিতে থাকা লোকজনের জন্য। পরে সাধারণ দেশবাসীর জন্যও চাইবে। প্রথম দফায় মিলতে চলা ভ্যাকসিন ঠিকঠাক সংরক্ষণ, টিকাকরণের প্রস্তুতিও সেরে ফেলেছে তারা।
ভারত সাধ্যের মধ্যে থাকা দামে ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করলে তা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও সূত্রটির অভিমত।
ভারতের সঙ্গে নেপালের সীমান্ত নিয়ে যে বিরোধ রয়েছে, সে ব্যাপারে শেষ বৈঠক হয়েছে ২০১৯ এর আগস্টে। তবে ভারত বলেছে, সফররত নেপালি বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সব দিক নিয়ে কথা হতে পারে, কিন্তু সীমান্ত সমস্যার ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হবে না কারণ জয়েন্ট কমিশন তার সঠিক মঞ্চ নয়।
বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, সীমান্ত প্রশ্নে আমাদের অবস্থান ভাল করেই সবার জানা। জেসিএম আর সীমান্ত আলোচনা পৃথক মেকানিজম। তবে উচ্চপদস্থ কূটনৈতিক মহলের খবর, মূলত নেপালি বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হবে করোনাভাইরাস অতিমারী, ভ্যাকসিন ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে।
তবে সীমান্ত ইস্যু নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারেও দুই বিদেশমন্ত্রীর কথা হতে পারে। শ্রীবাস্তব বলেছেন, যৌথ কমিশন এক গুরুত্বপূর্ণ মেকানিজম যেখানে আমাদের দ্বিপাক্ষিক পার্টনারশিপ ও আমাদের বিশেষ, অভিনব সম্পর্ক আরও জোরদার করতে রাজনৈতিক দিশা দেখানোর গোটা বিষয়টি শীর্ষ স্তরে রিভিউ করার সুযোগ পাওয়া যায়।