নয়াদিল্লি: সংক্রমণের হার হয়তো সামান্য কমেছে। কিন্তু বিদায় নেওয়ার কোনও লক্ষ্ণণই নেই। ইউরোপের বেশ কিছু দেশে তো দ্বিতীয় পর্যায়ের করোনা আক্রমণ শুরু হয়েছে। তাই ভ্যাকসিন ছাড়া এই শত্রুকে পাকাপাকি মোকাবিলার আর কোনও পথ নেই। করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় টিকা নিয়ে আসতে লড়াই চলছে গোটা দুনিয়া জুড়েই। আমেরিকা, ব্রিটেন, রাশিয়া, চিনের পাশাপাশি ভারতেও টিকা নিয়ে বিস্তর গবেষণা চলছে গত কয়েক মাসে। আশার আলো দেখাচ্ছে পুণের বায়োটেক সংস্থা জেনাভো বায়োফার্মাসিউটিক্যালস। ফাইজারের নাম এখন খুব শোনা যাচ্ছে সবার মুখে। একই পথে মেসেঞ্জার আরএনএ-কে কাজে লাগিয়ে জেনাভো টিকা প্রস্তুত করেছে।পরীক্ষাগারে সেফটি ট্রায়ালে সাফল্যের পরে মানুষের শরীরে টিকা দেবে তারা। কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ামক সংস্থা মানবদেহে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য অনুমতি দিয়েছে। অতএব ভারতের টিকা তৈরির লড়াইয়ে আগুয়ান সংস্থা ভারত সেরাম, বায়োটেক, ক্যাডিলা-র মতোই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে তৈরি জেনাভো।
বেশ কিছুদিন ধরেই জেনাভো এই টিকার প্রি-ক্লিনিকাল পর্ব চালাচ্ছিল তাদের ল্যাবে।টিকা প্রয়োগ করে দেখা হচ্ছিল পশুদের শরীরে। এতে সাইড এফেক্ট না দেখা দিলে সাধারণত সংশ্লিষ্টি বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয় ভ্যাকসিন রেগুলেটরি কমিটিতে। টিকার কার্যকারিতা ষোলো আনা নিশ্চিত হতে পারলে তবেই তা মানব দেহে প্রযোগের অনুমতি মেলে।এক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে। টিকার ট্রায়াল পশুদের শরীরে সফল হয়েছে বলেই হিউম্যান ট্রায়ালের ছাড়পত্র জুটেছে। মেসেঞ্জার আরএনএ সিকুয়েন্সকে কাজে লাগিয়েই জেনাভো তাদের ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট এইচজিসিও-১৯ বানিয়েছে।
কোন কোষে কী প্রোটিন তৈরি হচ্ছে, তার জেনেটিক কোড শরীরের নির্দিষ্ট কোষে পৌঁছে দেওয়াই হল মেসেঞ্জার আরএনএর কাজ। ভ্যাকসিনটি তৈরি হয়েছে আরএনএ ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন দিয়ে।ক্রম বিক্রিয়ায় বি-কোষ ও টি-কোষ অ্যাক্টিভ হবে। বি-কোষ থেকে প্লাজমা অর্থাৎ রক্তরসে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে।আর অ্যান্টিবডি প্রতিরোধ করবে মারণ ভাইরাসকে। জেনোভা-র তৈরি করা ভ্যাকসিনের কাজের প্রক্রিয়াটি এই রকমই। জানা যাচ্ছে, ২ থেকে ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রায় মাস দুয়েক ঠিক থাকবে এই ভ্যাকসিন। এই টিকায় আশার সঞ্চার ঘটেছে গবেষকদের মধ্যে। বাস্তবে এটি করোনাভাইরাস নির্মূলে কেমন ভূমিকা নেয় তা সময়ই বলবে।