নয়াদিল্লি: করোনা ভ্যাকসিনের আশায় দিনগোনা আসমুদ্রহিমাচলের জন্য সুখবর। ফাইজারের পর এবার জরুরি ভিত্তিতে ভারতের বাজারে করোনা ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমতি চাইল ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। সূত্রের খবর, ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার (ডিসিজিআই) কাছে ভ্যাকসিন বাজারজাত করতে চেয়ে ভারতের প্রথম সংস্থা হিসেবে আপৎকালীন ছাড়পত্র চেয়েছে পুণের সিরাম ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট ।


অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রিটেনের অ্যাস্ট্রোজেনেকার সঙ্গে করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করছে সিরাম। ভারতে যার নাম কোভিশিল্ড। এর আগে আমেরিকার ওষুধ নির্মাতা সংস্থা ফাইজার ভারতে ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে। তাদের পর এবার ভারতের বাজারে ভ্যাকসিন বাজারজাত করার দৌড়ে সরকারিভাবে নামল সিরাম।

এই মুহূর্তে কলকাতার নাইসেড সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলছে কোভিশিল্ডের তৃতীয় তথা শেষ পর্যায়ের ট্রায়াল। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) যে পর্বে তাদের সাহায্য করছে। দুই ডোজের পর কার্যকারিতা প্রায় ৭০ শতাংশ হলেও প্রথম ডোজের পর কিছু ক্ষেত্রে প্রায় ৯০ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছিল অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার তৈরি প্রতিষেধক। যা নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন সিরাম ইন্ডিয়ার প্রধান আদার পুনাওয়ালা।

তিনি আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন, ৫০০ টাকার কাছাকাছি মূল্যে ভারতে পাওয়া যাবে কোভিশিল্ড প্রতিষেধক। পাশাপাশি ফাইজারের প্রতিষেধেকের মতো অতি নিম্ন তাপমাত্রার বদলে তুলনামূলক অনেক কম তাপমাত্রায় ভ্যাকসিন কার্যকর থাকবে বলেই তাদের দাবি। ফাইজারের প্রতিষেধক যেখানে মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে কার্যকর থাকে, সেখানে সিরামের কোভিশিল্ড প্রতিষেধক ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডেই কার্যকর থাকবে।

গত সপ্তাহেই চেন্নাইয়ের এক স্বেচ্ছাসেবক যদিও দাবি করেছিলেন কোভিশিল্ড-র পরীক্ষা স্তরে থাকা প্রতিষেধক নিয়ে তাঁকে একাধিক শারীরিক সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। যে দাবি ভিত্তিহীন বলে জানিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করে সিরাম। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারও জানিয়ে দেয়, ট্রায়াল প্রক্রিয়া বন্ধ করার কোনও প্রশ্নই নেই। কলকাতায় প্রতিষেধক নেওয়া প্রাক্তন মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিমও জানিয়েছেন, কোনও সমস্যা বোধ করেননি তিনি।

আগামীকাল থেকে ব্রিটেনে ও চলতি সপ্তাহে বাহরিন জনসাধারণের জন্য ফাইজারের প্রতিষেধক দেওয়া চালু হয়ে যাবে। মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাটি ট্রায়াল প্রক্রিয়া টপকে বিশেষ পদ্ধতিতে ভারতের বাজারে করোনা প্রতিষেধক বাজারজাত করতে ছাড়পত্র চেয়েছিল ফাইজার। আর নির্দিষ্ট ট্রায়াল প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা সিরাম ছাড়পত্র চাইল এবার। যার ফলে আশা করাই যায়, দ্রুতই ভারতের বাজারে আসছে করোনা ভ্যাকসিন। কিছুদিন আগেই দেশবাসীর কাছে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে করোনা ভ্যাকসিন এসে পড়ার বার্তাই দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।