নয়াদিল্লি: আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে ভারতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ করোনা টিকাকরণ অভিযান। এই অভিযানে প্রথম দফায় ৩ কোটি মানুষকে ভারতে আপৎকালীন ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত দুটি করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের খবর অনুযায়ী, সারা বিশ্বের অন্যান্য ভ্যাকসিনের তুলনায় ভারতের দুটি ভ্যাকসিন সবচেয়ে সস্তা ও কার্যকরী। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ভারত সরকার সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া ও ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের কাছ থেকে ভ্যাকসিন ক্রয় শুরু করে দিয়েছে। ইতিমধ্যে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছেও গিয়েছে ভ্যাকসিন।
কেন্দ্র সরকার সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার কাছ থেকে ১.১০ কোটি ভ্যাকসিন প্রতি ডোজ প্রায় ২০০ টাকা দামে কিনেছে। এই ২০০ টাকার মধ্যে সামিল নয় কর। এর পাশাপাশি সরকার ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের কাছ থেকে ৫৫ লক্ষ ডোজ নিয়েছে। এরমধ্যে ৩৮.৮ লক্ষ ডোজ কেনা হয়েছে প্রতি ২৯৫ টাকা প্রতি ডোজ দামে। এর পাশাপাশি ১৬.৫ লক্ষ ডোজ ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কেন্দ্রকে বিনা মূল্যে দিয়েছে। আর এতগুলি ভ্যাকসিন নিখরচায় মেলায় ভারত সরকারের বক্তব্য যে, ৫৫ লক্ষ ভ্যাকসিনের দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি ডোজে ২০৬ টাকা। বিশ্বের অন্যান্য ভ্যাকসিনের দাম সংক্রান্ত তথ্যও সামনে এসেছে।
আন্তর্জাতিক স্তরে


• ফাইজার বায়োটেকের ভ্যাকসিনের দাম প্রতি ডোজ ১৯.৫০ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ ভারতে এর দুটি ডোজের দাম পড়বে ২৮০০ টাকার বেশি হবে।
• মডার্নার ভ্যাকসিনের একটি ডোজের দাম ৩২-৩৭ ডলার। অর্থাৎ, ভারতে এর দাম হবে প্রতি ডোজে ২৩৪৮ থেকে ২৭১৫ টাকা।
• চিনের সিনোফার্ম ভ্যাকসিনের দাম প্রতি ডোজে ৭৭ মার্কিন ডলার অর্থাৎ ৫৬৫০ টাকা।

• সিনোভ্যাক বায়োটেকের প্রতি ডোজের দাম ১৪ মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রায় ১০২৭ টাকার মতো।

• নোভাভ্যাক্সের প্রতি ডোজের দাম ১৬ মার্কিন ডলার, অর্থাৎ প্রতি ডোজ ভারতীয় মুদ্রায় ১১১৪ টাকার মতো।

• রাশিয়ার স্পুটনিক ভি এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিনের প্রতি ডোজের দাম ১০ ডলার অর্থাৎ ৭০০ টাকার মতো হবে।

এরমধ্যে ফাইজারের ভ্যারসিন মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় রাখার প্রয়োজন। অন্যদিকে, বাকি ভ্যাকসিনগুলি ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় রাখা যেতে পারে। এখন যে দামগুলি সামনে এসেছে, সেগুলিতে পরিবহণ খরচ ও কর অন্তর্ভূক্ত নয়। ফলে এগুলির দাম আরও বেশি হতে পারে। তবে বাকি দেশগুলির তুলনায় ভারতে ভ্যাকসিনের দাম বেশ সস্তা।
কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত ৫৪ লক্ষ ৭২ হাজার ভ্যাকসিনের ডোজ মিলেছে। অন্যদিকে, বাকি ভ্যাকসিন ১৪ জানুয়ারির মধ্যে পাওয়া যাবে। এগুলি রাখার জন্য স্টোরেজ ব্যবস্থাও প্রস্তুত। এরমধ্যে চারটি বড় স্টোরেজ জিএমএসডি কারনাল, মুম্বই, কলকাতা ও চেন্নাইয়ে রয়েছে। এছাড়াও রাজ্যগুলিতেও রাজ্য ভ্যাকসিন স্টোর রয়েছে।
ভারতে প্রথম পর্বে তিন কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মীও ফ্রন্টলাইন কর্মীরা। কেন্দ্র তাঁদের নিখরচায় ভ্যাকসিন দেবে। ১৬ জানুয়ারি টিকাকরণ শুরু হবে।