তিরুবনন্তপুরম: দেশ তথা বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের তীব্র আতঙ্কের মধ্যেই কেরলের হাইকোর্টে এক আজব মামলা। পিটিশনকারীর দাবি, করোনাভাইরাস সংক্রান্ত পরিস্থিতিতে মদেরও হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা থাকা উচিত। তাঁর যুক্তি, এরফলে জনবহুল দোকানে যেতে হবে না ক্রেতাদের। এই পিটিশন আদালত শুধু খারিজই করেনি, সেইসঙ্গে পিটিশনকারীর ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে।
জ্যোতিষ নামে ওই ব্যক্তি কেরল হাইকোর্টে তাঁর আর্জিতে বলেন, মদের দোকানে প্রচুর ভিড় হয়ে থাকে। মদ কিনতে গেলে সেক্ষেত্রে কোনও ক্রেতার করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। এজন্য আবগারী দফতরকে অনলাইনে মদ বিক্রির বিষয়টি বিবেচনা করতে নির্দেশ দিতে আদালতের কাছে আর্জি জানান তিনি। এতে ঘরে বসেই ক্রেতারা মদ পেয়ে যাবেন এবং ভাইরাস থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন।
এই আর্জি দেখেই ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি এ কে জয়শঙ্করন নাম্বিয়ার। তিনি পিটিশনকারীকে তীব্র ভাষায় তিরস্কার করেন। তিনি পিটিশনকারীর আইনজীবীর কাছে জানতে চান, এটা কী ধরনের আর্জি? আদালতের দায়িত্ব মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা। কিন্তু এ ধরনের দাবি কেউ কীভাবে জানাতে পারেন? এটা সরাসরি বিচার প্রক্রিয়ার অপপ্রয়োগ। আবেদনকারী এ ধরনের পিটিশন দায়ের করে মজা করেছেন।
বিচারপতি তাঁর নির্দেশে কঠোর ভাষায় লেখেন, আদালত যতদূর সম্ভব নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষিত করার চেষ্টা করে। এক মারাত্মক রোগের আশঙ্কা সত্ত্বেও বিচারপতি, আদালতের কর্মীরা ও আইনজীবীরা আদালতে আসছেন, যাতে বিচারপ্রার্থীদের বিচার পেতে কোনও সমস্যা না হয়। এ ধরনের আর্জি শোনার জন্য কি আদালত খুলে রাখা হয়েছে?
এ ধরনের পিটিশনকে যে তিনি ঘৃণার চক্ষে দেখছেন, তা জানিয়ে বিচারপতি বলেছেন, পিটিশনকারীর স্বার্থপর মনোভাব সম্পর্কে তিনি শুধু আফসোসই জানাতে পারেন।
বিচারপতির কঠোর মনোভাব দেখে পিটিশনকারীর আইনজীবী আর্জি প্রত্যাহারের অনুমতি প্রার্থনা করেন। কিন্তু বিচারপতি তা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এই মামলায় পিটিশনকারীর জরিমানা করা জরুরি। এরফলে পিটিশনকারী ও তাঁর মতো অন্য কেউ উপযুক্ত শিক্ষা পাবেন।
বিচারপতি আরও বলেছেন, এই আর্জি শুধু মাত্র ন্যায়ের সিদ্ধান্তকে উপহাস করাই নয়, তা আদালতের মতো প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা নিয়ে মজা করারও সামিল।
বিচারপতি আবেদনকারীর ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এই অর্থ মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা হবে।