নয়াদিল্লি: করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন নিয়ে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই একটা স্পষ্ট চিত্র উঠে আসবে বলে মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। তিনি আরো বলেছেন, জুন-জুলাইয়ের মধ্যে বিজ্ঞানসম্মতভাবে অনুমোদিত, নিরাপদ ও কার্যকরী ভ্যাকসিন পেয়ে যাবেন প্রায় ৩০ কোটি মানুষ। বিশেষজ্ঞরা দেশে ভ্যাকসিন বন্টনের পন্থা-পদ্ধতি নিয়ে পরিকল্পনায় কাজে ব্যস্ত বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, ভারতে ভ্যাকসিন উৎপাদনের ক্ষমতা ও দক্ষতা সবারই জানা। উন্নয়নশীল দেশগুলির প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনের ৬০ শতাংশই আমরা সরবরাহ করে থাকি। সারা বিশ্বের প্রায় এক-চতুর্থাংশ। মোটামুটি সারা বিশ্বে প্রায় শখানেক সম্ভাব্য ভ্যাকসিন পরীক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এরমধ্যে ভারতে ৩০ টির মতো ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ চলছে। এরমধ্যে পাঁচটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে-দুটি অ্যাডভান্সভ ও দুটি প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্বে রয়েছে। আমাদের কাছে যে রিপোর্ট রয়েছে, যে কথাবার্তা চলছে, তাতে আমি ২০২১-এর গোড়াতেই ভ্যাকসিন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।
একটি ইংরেজি দৈনিক প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যকর্মী এবং পুলিশ, পুরকর্মী সহ ক্ষেত্রের প্রথমসারির করোনা যোদ্ধা, সেইসঙ্গে ৬৫ বছরের বেশি ব্যক্তিদের প্রথম পর্বে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। জনসাধারণের জন্য এর সরবরাহ নিয়ে বলা যেতে পারে যে, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ১৩৫ কোটি মানুষকে একসঙ্গে ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব নয়। তবে আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, জুন-জুলাইয়ের মধ্যে প্রায় ৩০ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে। তাঁদের মধ্যে অগ্রাধিকার পাবেন স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ ও আধাসেনা বা সেনা, পুরকর্মী, সাফাইকর্মী। এরপর ৬৫ বছরের বেশি ব্যক্তিরা। এরপর ৫০ থেকে ৬৫ বছর বয়সের লোকজন এবং পরে তরুণদের মধ্যে যাঁদের ডায়েবেটিস, হৃদরোগ সংক্রান্ত কোমর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।


স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দাবি, ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভারত খুবই ভালো কাজ করেছে। তিনি জানিয়েছেন, সরকার ইলেকট্রনিক ভ্যাকসিন ইন্টেলিজেন্স নেটওয়ার্ক-কে একটি কোভিন মঞ্চে রূপান্তরিত করেছে, যা মানুষকে ভ্যাকসিনের প্রাপ্যতা সম্পর্কে সমস্ত তথ্য সরবরাহ করবে।
ভ্যাকসিন পাওয়া গেলে সরকার কীভাবে বন্টন সংক্রান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, সে সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, কোথায় ভ্যাকসিন রাখা হচ্ছে, কোন তাপমাত্রায় রাখা হচ্ছে, সেদিকে নজর রাখা হবে। টিকা প্রদানকারীদের পাশাপাশি এনজিও-গুলিকেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে এনজিও-গুলির সঙ্গে কথাও শুরু হয়েছে।
ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত মাস্ক পরা, স্যানিটাইজার ব্যবহার বা সাবান-জলে হাত ধোয়া ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো বিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এভাবে ভ্যাকসিনের জন্য অপেক্ষার পরিবর্তে এ ধরনের ‘সোশ্যাল ভ্যাকসিন’-এর ওপর আস্থা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।