নয়াদিল্লি: আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যে ৩০ কোটি দেশবাসীকে টিকা দেওয়া হবে। দেশের বিজ্ঞানী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা দেশীয় প্রতিষেধক তৈরিতেও জোর দিচ্ছেন। শনিবার এমনই জানালেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন।
শনিবার ছিল ২২তম মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠক। সেখানে করোনা টিকাকরণ নিয়ে সরকারের পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। হর্ষ বর্ধন বলেন, ‘‘আমাদের বিজ্ঞানী এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জিনোম সিকোয়েন্সিং এবং করোনাভাইরাসকে বিচ্ছিন্ন করে টিকা তৈরির কাজ করেছেন। আগামী ছয় থেকে সাত মাসে আমরা ৩০ কোটি লোককে টিকা দিতে পারব।’’ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী যোগ করেন, ‘‘দেশে এক কোটির কিছু বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে সেরে উঠেছেন সাড়ে ৯৫ লক্ষ মানুষ। সুস্থতার হারে বিশ্বের দেশগুলির মধ্যে ভারত অন্যতম। আমাদের সুস্থতার হার ৯৫. ৪৬ শতাংশ।’’
এদিনের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসাও উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে। করোনার শুরু থেকে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রশংসা করে হর্ষবর্ধন বলেন,‘‘আমি আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ দিতে চাই। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে যিনি করোনা ভাইরাসের মতো অতিমারীর ক্ষেত্রে গত এক বছর ধরে অনুকরণীয় নেতৃত্ব দিয়েছেন। সব দিকে লক্ষ্য রেখেছেন। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছেন। এমনকি যখন আমরা টিকা তৈরির পর্যায়ে রয়েছি, তখনও তিনি নিজে দেশের সব গবেষণাগার ঘুরে দেখেছেন।’’
হর্ষবর্ধন জানিয়েছেন, দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি পেরোলেও, অক্টোবর-নভেম্বরে উৎসবের মরশুম পেরিয়ে এলেও নতুন করে দেশজুড়ে সংক্রমণের ঢেউ আসেনি। উৎসবের মরশুম পার হওয়ার সাফল্য তুলে ধরলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ফের আবেদন করেছেন, মানুষ যেন করোনাবিধি মেনে চলেন। দ্রুত টিকাদান অভিযানের প্রয়োজনীয়তার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
করোনা সংক্রমণে রাশ টানতে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি অভিযোগ তুলেছে। যদিও, এনসিডিসি-র অধিকর্তা সুরজিৎ কুমার সিংহ বিস্তারিত রিপোর্ট তুলে ধরে জানিয়েছেন তথ্য-পরিসংখ্যান নির্ভর সরকারি নীতি অতিমারী নিয়ন্ত্রণে সাফল্য এনে দিতে পেরেছে।
নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কমিটির প্রধান ভি কে পল মন্ত্রিগোষ্ঠীর প্রশংসা করে টিকাকরণের দিকগুলি তুলে ধরেন। পরীক্ষামূলক প্রয়োগপর্বের আগের ধাপগুলি এবং পরীক্ষামূলক প্রয়োগ পর্ব এবং এবং ছয় করোনা টিকার স্বেচ্ছাসেবকদের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি। বিদেশমন্ত্রকের তরফে ১২টি দেশ থেকে করোনা টিকা চেয়ে আবেদন এসেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
করোনায় মৃত্যুহার কমাতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণও জোর দিয়েছেন করোনা বিধি মেনে চলার উপরে। টিকাদান পর্ব শুরু হলেও শুরু হওয়ার পরেও যেন মানুষ কোনও ভাবেই গা ছাড়া মনোভাব নিয়ে না চলেন, করোনার যাবতীয় সতর্কতা মেনে চলেন তা নিয়ে আগেও একাধিকবার সতর্ক করেছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।