কলকাতা ও নয়াদিল্লি: তৃণমূলের সুর এবার সিপিএমের গলায়। বিরোধীদের বাগে আনতে মোদী সরকার সিবিআই, ইডি-র মতো কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে কাজে লাগাচ্ছে বলে মঙ্গলবার অভিযোগ তুললেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। অবিজেপি রাজ্যগুলির উদ্দেশে ডাক দিলেন একজোট হওয়ার। এদিন ইয়েচুরি বলেন, অ-বিজেপি রাজ্যগুলো এক হোক। বিজেপি ঘনিষ্ঠের বিরুদ্ধ তদন্ত করছে না। বিরোধীদের ক্ষেত্রেই সিবিআই ইডি-কে ব্যবহার করছে।
বিরোধীদের জব্দ করতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে ব্যবহারের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। গত তিন বছরে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগে বারবার সরব হয়েছে তৃণমূলও। যদিও বিজেপি বরাবরই এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের দাবি, সিবিআই, ইডি হোক কিংবা এনআইএ, কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি বরাবরই নিজের মতো করে তদন্ত করে।
ইয়েচুরি অবশ্য এদিন অস্ত্র গুছিয়েই সাংবাদিক বৈঠকে বসেছিলেন। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের স্বপক্ষে তিনি টেনে আনেন তামিল ছবি ‘মরসল’-এর সংলাপ ঘিরে টাটকা বিতর্কের প্রসঙ্গ।
বিজেপির চাপেই এই ছবি থেকে জিএসটির সমালোচনামূলক একটি সংলাপ ছাঁটতে রাজি হতে হয়েছে প্রযোজকদের। ছবির একটি জায়গায় জনপ্রিয় তামিল নায়ক বিজয়ের সংলাপ ছিল, সিঙ্গাপুরের লোকে ৭ শতাংশ জিএসটি দেয়। বিনামূল্যে চিকিৎসা পায়। ভারত সরকার ২৮ শতাংশ জিএসটি নেয়, কিন্তু, কেন বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে পারে না? আমরা ওষুধের জন্য ১২ শতাংশ জিএসটি দিই, কিন্তু মদে জিএসটি নেই। দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোয় অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকে না!
মোদীর চালু করা জিএসটির এই সমালোচনা শুনেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিজেপি। দাবি তোলে এই সংলাপ বাদ দিতে হবে। তামিলনাড়ুর বিজেপি নেতা এইচ রাজা দাবি করেন, তিনি অনলাইনে মরসল দেখেছেন। এবং তিনি মনে করেন, ওই সংলাপ বাদ দেওয়াই উচিত।
এর পাল্টা বিজেপি নেতা এইচ রাজার বিরুদ্ধে সুর চড়ান আরেক তামিল অভিনেতা বিশাল। তিনি অভিযোগ করেন, এই মন্তব্য করে বিজেপি নেতা এইচ রাজা আদতে পাইরেসিতে উৎসাহ দিচ্ছেন। সূত্রের দাবি, এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিশালের প্রযোজনা সংস্থার অফিসে হানা দেন জিএসটি ইন্টেলিজেন্স শাখার অফিসাররা। যদিও, চেন্নাইয়ের ইন্টেলিজেন্স শাখার যুগ্ম অধিকর্তা পি ভি কে রাজশেখরের নামে জারি করা একটি বিবৃতিতে দাবি করা হয়, কোনও তল্লাশি অভিযান চালানো হয়নি। এই খবর ভুল।
যদিও, বিরোধীরা এই দাবি মানতে নারাজ। বিরোধীদের দাবি, মোদী সরকারের অসহিষ্ণুতা এত চরমে পৌঁছেছে যে সিনেমাতে জিএসটির সমালোচনা পর্যন্ত তারা সহ্য করতে পারছে না! তাই যেই এর সমালোচনা করছে তার বাড়িতে এজেন্সি পাঠিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। সব মিলিয়ে ফের একবার কেন্দ্রীয় এজেন্সির ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে।