টাটা সন্স-এর বোর্ড সদস্যদের লেখা একটি ই-মেলে এদিন নিজের ক্ষোভ উগড়ে দেন সাইরাস। সেখানে তিনি বোর্ড সদস্যদের দিকে অভিযোগ তুলে জানান, ভারতের সর্ববৃহৎ গ্রুপের চেয়ারম্যানের পদ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করার আগে, তার বক্তব্য শোনার প্রয়োজনও মনে করা হয়নি।
সাইরাস বলেন, গতকাল বোর্ড মিটিংয়ে যা ঘটেছে, তাতে আমি এতটাই বিস্মিত যে ভাষায় প্রকাশ করার ক্ষমতা নেই। বৈঠককে বেআইনি ও অবৈধ বলে উল্লেখ করে বোর্ড সদস্যদের উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, নিজেদের গরিমাই হারালেন! তিনি যোগ করেন, কোনও ব্যাখ্যা বা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ ছাড়াই এই ভাবে একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দেওয়াটা দেশের শিল্পমহলে বেনজির।
সাইরাস জানান, ২০১২ সালের ডিসেম্বরে তিনি যখন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বভার নিয়েছিলেন, তখন তাঁকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, সাইরাসের দাবি, কিছুদিনের মধ্যেই টাটা পরিবারের ট্রাস্ট এবং টাটা সন্সের বোর্ডের যে সম্পর্ক তাতে বদল করা হয়।
সদ্য-বহিষ্কৃত চেয়ারম্যানের দাবি, এরপর থেকেই সমস্যার সূত্রপাত। বিভিন্ন সময়ে তিনি এই ইস্যুটি বোর্ডের সামনে তুলে ধরেন। কিন্তু, প্রতিষ্ঠানের দুই-তৃতীয়াংশ শেয়ারের মালিক হওয়া সত্ত্বেও ফ্যামিলি ট্রাস্টের প্রতিনিধিরা কার্যত ‘পোস্টম্যান’-এ পরিণত হয়েছিলেন। বারবার তাঁরা বৈঠকের মাঝে বাইরে গিয়ে রতন টাটার সঙ্গে কথা বলতেন বলে অভিযোগ করেন মিস্ত্রি।
সাইরাসের অভিযোগ, ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও রতন টাটার জন্যই ন্যানো প্রকল্পকে বন্ধ করা যায়নি। কারণ, সেখানে হয়ত তাঁর ‘আবেগ’ জড়িত ছিল। পাশাপাশি, একটি বৈদ্যুতিন গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থায় এখানকার তৈরি ন্যানো গ্লাইডার্স সরবরাহ করা হত। তাই তিনি বন্ধ করেননি।
সাইরাসের আরও অভিযোগ, অসামরিক বিমান চলাচল পরিষেবা নিয়েও তাঁদের মধ্যে দ্বৈরথ ছিল। তিনি বলেন, ভারত ও সিঙ্গাপুরের কিছু ‘রহস্যময়’ সংস্থার সঙ্গে ২২ কোটি টাকার চুক্তির বিরোধিতা করেছিলাম।
সাইরাসের দাবি, যখন তিনি টাটা সন্সের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তখন সংস্থাটি লোকসানে চলছিল। ঋণগ্রস্ত ছিল। যার জেরে তিনি সংস্থার বিভিন্ন লাভজনক ও লোকসানে চলা বিভাগগুলিকে আলাদা করতে শুরু করেন।
ইমেলে সাইরাস বলেন, তিনি ভাবতেই পারছেন না, যে তাঁকে নন-পারফরম্যান্সের অভিযোগে অপসৃত করা হয়েছে। তাঁর উষ্মা, সেখানে এমন দুই ডিরেক্টর সমর্থন করেছেন, যাঁরা কিছুদিন আগেই তাঁর কাজকে বাহবা দিয়েছিলেন।
২৫ তারিখ এই ইমেল পাঠান সাইরাস মিস্ত্রি। যা ঘিরে বুধবার দিনভর তোলপাড় সংবাদমাধ্যম। এ বিষয়ে টাটা সনসের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।