লখনউ: দাদরিকাণ্ডে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিহত মহম্মদ আখলাকের পরিবার।

সম্প্রতি, ফরেন্সিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয় যে নিহতের বাড়িতে যে মাংসের নমুনা উদ্ধার হয়েছে, তা গরু-বিশেষ কোনও প্রাণীর। এরপরই বাড়িতে গরুর মাংস রাখা এবং ভক্ষণ করার জন্য আখলাকের পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পুলিশকে নির্দেশ দেয় স্থানীয় আদালত।

এই রায়ের বিরুদ্ধেই এবার উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছে নিহতের পরিবার। তাদের আইনজীবী আসাদ হায়াত জানান, গ্রেফতারি পরোয়ানার বিরুদ্ধে শীঘ্রই ইলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করতে চলেছে আখলাক-পরিবার।

এই ঘটনায় নিহতের পরিবারের সমর্থনে দাঁড়িয়েছেন রাষ্ট্রীয় উলেমা পরিষদের জাতীয় সভাপতি মৌলানা আমির রহসাদি মদনি। তাঁর দাবি, মথুরার গবেষণাগারে যে মাংসের নমুনা পাঠানো হয়েছিল, তা ‘পাল্টে’ দেওয়া হয়েছিল।

মদনি আরও জানান, যে মাংসের নমুনা দাদরির গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছিল, তা নিহতের বাড়ির ১৫০ মিটার দূর থেকে উদ্ধার হয়। পাশাপাশি, সেইসময় উদ্ধার হওয়া মাংসটি প্রায় ৪-৫ কিলোগ্রাম ছিল। অথচ, ল্যাবে পাঠানো মাংসের নমুনাটি ছিল প্রায় ২ কেজির। মদনির দাবি, এর থেকেই পরিষ্কার, নমুনা ‘বদলে’ দেওয়া হয়েছে।

আখলাকের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর এক প্রতিবেশী। ওই প্রতিবেশী তাঁর অভিযোগে দাবি করেন, গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর আখলাক ও তাঁর ছেলে দানিশকে তিনি দেখেছিলেন একটি বাছুরকে মারতে। অভিযোগে আরও বলা হয়, আখলাক বাছুরটিকে ধরে ছিলেন, আর তাঁর ভাই প্রাণীটিকে হত্যা করে। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই ১০ দিন আগে নিম্ন আদালত পুলিশকে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেয়।

আখলাকের আরেক ছেলে সরতাজ, যিনি ভারতীয় বায়ুসেনায় কর্মরত, অভিযোগ করেন, তাঁদের পরিবারের সঙ্গে পশুর মতো আচরণ করা হচ্ছে। অথচ, তাঁর পরিবারই হিংসার শিকার। তিনি এ-ও জানান, একবার তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। প্রয়োজন হলে আবারও করবেন।

এদিকে, প্রতিবেশীর অভিযোগের ভিত্তিতে বিসাদা গ্রামের বাসিন্দারা গৌতমবুদ্ধ নগরের এসএসপি-র সঙ্গে গত ৫ জুন দেখা করে আখলাকের পরিবারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার দাবি জানান। এর প্রেক্ষিতে বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট বিজয় কুমার তদন্তের নির্দেশ দিয়ে আখলাকের পরিবারের বিরুদ্ধে গো-হত্যার দায়ে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশে গো-মাংস খাওয়া দোষ না হলেও, গো-হত্যা দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রমাণিত হলে সাত বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।