নয়াদিল্লি:সদ্য শেষ হওয়া গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের পরে আজ থেকে সংসদে শুরু হল শীতকালীন অভিযান। আর প্রত্যাশামতোই অধিবেশনের প্রথম দিনেই বিরোধীদের হট্টগোলের জেরে একাধিকবার মুলতবি হল রাজ্যসভা।  শুরুতেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ সম্পর্কে 'পাকিস্তানের সঙ্গে ষড়যন্ত্র' সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরমন্তব্য ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে সভা। মোদীর ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে শুরু হয় কংগ্রেস সহ বিরোধী সদস্যদের হট্টগোল।
কংগ্রেস সহ বিরোধীরা মনমোহন, প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি ও কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে মোদী গুরুতর অভিযোগ করেছেন বলে অভিযোগ করে। সভার অন্যান্য কাজ বাদ দিয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য ২৬৭ ধারায় নোটিশ দেয় বিরোধীরা। কিন্তু ওই ধারা খারিজ করে দেন চেয়ারম্যান এম বেঙ্কাইয়া নাইডু।
বিরোধীদের বিক্ষোভের জেরে দফায় দফায় মুলতুবী হয়ে যায় সভা। তিন-তিন বার মুলতুবী হয়। শেষপর্যন্ত তিনটের পর দিনের মতো উচ্চকক্ষ মুলতুবী করে দেওয়া হয়।

এর পাশাপাশি বিক্ষুব্ধ জেডিইউ নেতা শরদ যাদবের সদস্যপদ কেন খারিজ হল, তার ব্যাখ্যা চেয়ে উত্তপ্ত হয় রাজ্যসভা। শরদ ও তারিক আনোয়ারের সদস্যপদ খারিজের প্রতিবাদে সোচ্চার হন বিরোধীরা।
চেয়ারম্যান জেডি(ইউ)-র প্রাক্তন দুই সাংসদের সদস্য পদ খারিজের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বিরোধীরা প্রতিবাদ জানান। নাইডু এ বিষয়ে কোনও আলোচনার দাবিতে অসম্মতির কথা জানিয়ে দেন।
দুপুরে ফের সভা শুরু হলে বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ গুজরাতে ভোটের প্রচারে মনমোহনকে নিশানা করে মোদীর মন্তব্যর প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে মোদী যে অভিযোগ করেছেন তা অত্যন্ত গুরুতর। অনেক বিদেশ সচিব, হাই কমিশনার, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি ও প্রাক্তন সেনা প্রধানের বিরুদ্ধে গুজরাত নির্বাচনে পাকিস্তানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করা হয়েছে।
কিন্তু চেয়ারম্যান এ বিষয়ে আলোচনার নোটিশ খারিজ করে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিরোধীরা। তাঁরা হই-হট্টগোল শুরু করেন। দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত সভা মুলতুবী হয়ে যায়। এরপর ফের সভা শুরু হলে আজাদ ফের প্রসঙ্গটি তোলেন।
পরে ফের তিনটে পর্যন্ত সভা স্থগিত করে দেওয়া হয়। ফের সভা শুরু হলেও বিরোধীদের বিক্ষোভ চলতে থাকে। শেষপর্যন্ত এ দিনের মতো রাজ্যসভা মুলতুবী করে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, মৃতদের প্রতি শোকপ্রস্তাব ও নতুন সাংসদদের শপথগ্রহণের পরে মুলতবি হয়ে যায় লোকসভা।