নয়াদিল্লি: রাফাল চুক্তিকে সমর্থন করায় একটা সময়ে সমালোচিত হয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। বলা হয়েছিল, রাজনীতির মধ্যে ঢুকছে বাহিনী। কিন্তু, আজ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে পরিষ্কার হয়ে গেল, সেদিন বায়ুসেনা ঠিকই ছিল। এমনটাই জানালেন বায়ুসেনার প্রাক্তন প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল(অবসরপ্রাপ্ত) বি এস ধানোয়া।
ফরাসি যুদ্ধবিমান প্রস্ততকারী সংস্থা দাসোল্তের সঙ্গে ৫৯ হাজার কোটি টাকার রাফাল-চুক্তি নিয়ে সিবিআই তদন্ত চেয়ে দাখিল করা রিভিউ পিটিশন বৃহস্পতিবার খারিজ করে দেয় প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ।
রায়ের পর ধানোয়া বলেন, দর কষাকষির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বায়ুসেনার তৎকালীন উপ-প্রধান, এয়ার মার্শাল আর কে ভাদোরিয়া, যিনি বর্তমানে বায়ুসেনা প্রধান। ধানোয়া বলেন, আমরা নিশ্চিত ছিলাম, এই চুক্তিতে কোনওপ্রকার অসৎ পথ অবলম্বন করা হয়নি। এই কারণে, কংগ্রেসের আনা দুর্নীতির অভিযোগের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল বায়ুসেনা।
তিনি যোগ করেন, যখন আমরা চুক্তিকে সমর্থন করেছিলাম, তখন প্রবলভাবে সমালোচিত হতে হয়েছিল। বলা হয়েছিল, রাজনৈতিক মতামত পেশ করছি। কিন্তু, আমরা জানতাম, স্রেফ যোগ্যতার নিরিখেই বিচার করে রাফালকে সমর্থন করেছিলাম।
২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে রাফাল নিয়ে রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ধানোয়া বলেন, সেদিন বায়ুসেনা প্রধান হিসেবে আমি রায় স্বাগত জানিয়েছিলাম। আজ আমি খুশি যে, শীর্ষ আদালত তার আগের রায়ই পুনর্বহাল রাখল।
প্রসঙ্গত, ডিসেম্বরে দেওয়া শীর্ষ আদালতের রায়ের পুনর্বিবেচনার আবদন চেয়ে শীর্ষ আদালতেই রিভিউ পিটিশন দাখিল করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ শৌরি, যশবন্ত সিনহা এবং আইনজীবী প্রশান্তভূষণ। এদিন সেই আবেদন খারিজ করে আগের রায়ই পুনর্বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট।
পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার জবাব হিসেবে প্রাক্তন বায়ুসেনা প্রধান ধানোয়ার নেতৃত্বেই পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের বালাকোটে জঙ্গি লঞ্চপ্যাডে স্ট্রাইক চালিয়েছিল বায়ুসেনার লড়াকু বিমান। এদিন তিনি বলেন, আমার মনে হয় সুপ্রিম কোর্টের এদিনের রায়ের পর যাবতীয় বিতর্কের অবসান হবে এবং বায়ুসেনা তার কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করতে পারবে।
রাফালকে এদিন দুরন্ত যুদ্ধবিমান হিসেবে উল্লেখ করেন ধানোয়া। বলেন, সকলের বোঝা উচিৎ, ভারতের কাছে যুদ্ধবিমান কেনাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লড়াকু স্কোয়াড্রনের সংখ্যা ৩০-এর নীচে আমরা নেমে গেলে লড়াই চালানো সম্ভব নয়।
ধানোয়ার মতে, রাফালের দুটি স্কোয়াড্রন (একটি হরিয়ানার অম্বালা ও অন্যটি পশ্চিমবঙ্গের হাসিমারা), সুখোই-৩০এমকেআই-এর একটি এবং স্বদেশীয় তেজস-এর দুটি স্কোয়াড্রন তৈরি হয়ে গেলে, ভারতীয় বায়ুসেনা প্রয়োজনীয় শক্তি অর্জন করবে।