নয়াদিল্লি: আয়কর আদায়ে কড়া পদক্ষেপের পথে কেন্দ্র। সময়ে আয়কর জমা না দিলে হতে পারে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা। বকেয়া করে মাসে ১% সুদ। ২০১৮-র ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর নতুন নিয়ম।
রিটার্ন দাখিলের জন্য আয়কর দাতাদের ঝামেলা যেমন আগের চেয়ে অনেকটা কমানোর কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র, তেমনি সময়ে আয়কর জমা না দিলে, বাজাট প্রস্তাবে রাখা হয়েছে মোটা অঙ্কের জরিমানার সংস্থান। এবারের বাজেটে তেমনই প্রস্তাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
প্রস্তাব অনুযায়ী, ২০১৮ সালের পয়লা এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে নয়া বিধি। বিধির আওতায় আসবে ২০১৮-১৯ অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার বা মূল্যায়ন বর্ষ। বেতনভোগী সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন ৩১ জুলাই। অর্থাৎ, ২০১৭-১৮ আর্থিক বছর এবং অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার ২০১৮-১৯-এর জন্য রিটার্ন দাখিল করতে হবে ২০১৮ সালের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে।
যদি কোনও ব্যক্তি ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিল না করেন এবং তাঁর কোনও আয়কর বাকি না থাকে, তাহলে এতদিন পরের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত কোনও রকম জরিমানা ছাড়াই রিটার্ন দাখিল করতে পারতেন।
কিন্তু এখন যদি কোনও ব্যক্তির আয়কর বকেয়া থাকে, তাহলে ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল থেকে প্রতি মাসে ১% হারে বকেয়া করের ওপর সুদ গুণতে হবে। বকেয়া কর জমা দেওয়ার পরই তিনি রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
এবারের বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তির আয় বছরে ৫ লক্ষ টাকা হলে এবং ২০১৮ সালের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরের রিটার্ন দাখিল না করেন, তাহলে তাঁকে ১ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত দাখিল করতে পারবেন।
কিন্তু আয় বছরে ৫ লক্ষ টাকার বেশি হলে এবং ২০১৮ সালের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরের রিটার্ন দাখিল না করলে খোলা থাকছে দু’টি রাস্তা। প্রথমটি হল, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে রিটার্ন দাখিল এবং দ্বিতীয় রাস্তা হল, ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৯-এর ৩১ মার্চ পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে দাখিল করা যাবে রিটার্ন।
৩১ মার্চ, ২০১৯-এর পর কোনওভাবেই আর ২০১৭-১৮ আর্থিক বছর এবং মূল্যায়ন বর্ষ ২০১৮-১৯-এর রিটার্ন দাখিল করা যাবে না। এরকম পরিস্থিতিতে করদাতাকে নন ফাইলার ঘোষণা করা হবে এবং জরিমানা করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বর্তমান আয়কর ব্যবস্থা অনুযায়ী, আপনার বয়স যদি ৬০ বছরের কম হয় এবং বছরে আয় আড়াই লক্ষ বা তার বেশি হয়, তাহলে রিটার্ন দাখিল করতে হবে। আয়কর লাগুক বা না লাগুক। আপনার আয় করযোগ্য না হলেও যে টিডিএস কাটা হয় তা ফেরতযোগ্য হলে রিটার্ন দাখিল জরুরি।
আয়কর দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে প্রায় ৩ কোটি ৭০ লক্ষ ব্যক্তি রিটার্ন দাখিল করেছেন। ২০১৪-১৫ সালে এমন ৬৭ লক্ষ ৫৪ হাজার ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাঁরা বছরভর মোটা অঙ্কের লেনদেন করেছেন, কিন্তু ২০১৫-১৬ মূল্যায়ন বর্ষে রিটার্ন দাখিল করেননি। এর আগে এরকম অসংখ্য ব্যক্তিকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। এবার আর শুধু নোটিস নয়, করা হতে পারে মোটা টাকা জরিমানা।