নয়াদিল্লি: জম্মু ও কাশ্মীর সহ দেশের ৮টি রাজ্যে হিন্দুরা সংখ্যালঘু। কিন্তু ১৯৯২ সালের জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন আইনে কেন্দ্র বা ওই রাজ্যগুলির সরকার তাদের 'সংখ্যালঘু' তকমা না দেওয়ায় ওই সম্প্রদায়ের জন্য বরাদ্দ সুযোগসুবিধা 'অন্যায় ভাবে একতরফা' নিয়ে চলে যাচ্ছে সেখানকার সংখ্যাগুরু লোকজন। এহেন সওয়াল করে ওইসব রাজ্যে হিন্দুদের সংখ্যালঘু বলে ঘোষণার জন্য মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ পিটিশন দায়ের করেছেন অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায় নামে এক আইনজীবী।


বিজেপি সমর্থক অশ্বিনী জানিয়েছেন, রাজ্যগুলি হল জম্মু ও কাশ্মীর, লাক্ষাদ্বীপ, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ, মনিপুর ও পঞ্জাব।

২০১১-র সেনসাস উল্লেখ করে আবেদনকারীর পিটিশনে বলা হয়েছে, লাক্ষাদ্বীপ, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, জম্মু ও কাশ্মীর, অরুণাচল, মনিপুর ও পঞ্জাবে হিন্দুরা হল যথাক্রমে জনসংখ্যার ২.৫, ২.৭৫ , ৮.৭৫, ১১.৫৩, ২৮.৪৪, ২৯, ৩১.৩৯ ও ৩৮.৪০ শতাংশ। এই রাজ্যগুলিতে হিন্দুদের সংখ্যালঘু হিসাবে চিহ্নিত করে স্বীকৃতি দিতে না পারায় সংখ্যালঘুদের প্রাপ্য সুযোগসুবিধা বেশি পেয়ে যাচ্ছে সংখ্যাগুরুরা, ভারসাম্য থাকছে না। এই রাজ্যগুলিতে হিন্দুরা লাগাতার মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার, মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।

পাশাপাশি ১৯৯৩-এর ২৩ অক্টোবরের কেন্দ্রীয় সরকারের এক বিজ্ঞপ্তিকেও চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে পিটিশনে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে পাঁচটি সম্প্রদায় যেমন মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, পার্সিকে সংখ্যালঘু বলে ঘোষণা করা হয়েছে। পিটিশনের বক্তব্য়, এহেন বিজ্ঞপ্তি একপেশে, অযৌক্তিকই শুধু নয়, ভারতের সংবিধান ও তার মৌলিক কাঠামোরও পরিপন্থী। তা খারিজ হওয়া উচিত।

'হিন্দু মানবাধিকার রিপোর্ট' শিরোনামে তৈরি একটি গবেষণাপত্রের উল্লেখ করে পিটিশনে এও বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষায় হিন্দুদের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ফেলে দেওয়ার উদ্যোগ চলছে। গত তিন বছরে সরকার ৭৬৫৯টি অ-সংখ্যালঘু স্কুল জোর করে বন্ধ করে দিয়েছে। পাশাপাশি সরকারি বাজেটে আদিবাসী, তফসিলি জাতি ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীগুলির চেয়ে বেশি বরাদ্দ ধার্য হয়েছে সংখ্যালঘুদের জন্য।

পিটিশনে সওয়াল করা হয়েছে, প্রকৃত ধর্মীয় ও ভাষাগত সংখ্যালঘুদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা মানে সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে সুরক্ষিত সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা, এতে কেবলমাত্র 'ভোটব্যাংকের রাজনীতির স্বার্থপূরণই হয়'।