দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, হিংসায় প্রত্যেকেই ভুক্তভোগী হয়েছেন। ২০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। হিংসায় হিন্দু ও মুসলিম-উভয় সম্প্রদায়ের মানুষেরই মৃত্যু হয়েছে। পুলিশও মারা গিয়েছেন। আমার কাছে আহতদের একটি তালিকা রয়েছে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে হিন্দু ও মুসলিম-উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের। সবাইকেই দুর্ভোগের শিকার হতে হয়েছে।
কেজরিবাল ও দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিশোদিয়া পরিস্থিতি পর্যালোচনায় উত্তর-পূর্ব দিল্লির হিংসা কবলিত এলাকায় গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী উত্তর-পূর্ব দিল্লির ডিসিপি-র অফিসেও যান।
এর আগে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, দিল্লির মানুষকে পরস্পরের হাতে হাত মিলিয়ে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর জন্য এগিয়ে আসতে হবে। মৃতদেহের স্তুপের ওপর আধুনিক দিল্লি গড়ে উঠতে পারে না। যথেষ্ট হয়েছে, ঘৃণা, হিংসা, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার রাজনীতি আর বরদাস্ত করা যায় না।
কেজরীবাল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা তলবের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হিংসা কবলিত এলাকায় কার্ফু জারি করতে হবে।
দিল্লির মানুষের কাছে তাঁর আর্জি- হিংসা পরাস্ত করুন। বাইরের কেউ আপনার এলাকায় শান্তি ব্যাহত করতে এলে পুলিশকে জানান।
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে কেজরিবাল বলেছেন, হিংসা যারা ছড়িয়েছে তাদের মদতের অভিযোগ প্রমাণিত হলে পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, দিল্লির মানুষকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই যে, আপনাদের জীবন রক্ষার দায় আমাদের। দিল্লির মানুষ ভালোবাসার মধ্যে জীবন কাটাতে চান। প্রত্যেক ধর্ম সৌভ্রাতৃত্বের ধারণায় বিশ্বাসী। আমরা চাই, আমাদের সন্তানদের ঠিকভাবে বড় হয়ে জীবনজীবিকা নির্বাহ করুক।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-র পক্ষে ও বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘাত ঘিরে চারদিন আগে শুরু হওয়া হিংসার ঘটনায় প্রায় ২০০ জন জখম হয়েছেন। বহু দোকান, ঘরবাড়ি ও পেট্রোল পাম্পে আগুন ধরিয়ে দেয় সশস্ত্র হিংসাশ্রয়ী জনতা।
কেজরীবাল গতকাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করে পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেন। এদিন কেজরিবাল বলেছেন, পুলিশ হিংসা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এদিন সকালে ট্যুইট করে কেজরিবাল বলেন, সারা রাত জুড়েই প্রচুর মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। সার্বিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও মানুষকে আস্থা দিতে পারেননি।
হিংসা কবলিত এলাকায় অবিলম্বে সেনা নামানোর দাবিও জানান তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি পুলিশের নিহত হেড কনস্টেবলের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের এক সদস্যের চাকরির আশ্বাস দিয়েছেন।