নয়াদিল্লি: দীর্ঘ ২৩ বছরের বিবাহিত জীবন। রয়েছে ২০ ও ১৮ বছরের দুই মেয়েও। কিন্তু দীর্ঘ দু-দশক পরেও ‘উপহার’ দিতে পারেননি ছেলে, এই অভিযোগে তিল তালাক!


ঘটনা দিল্লির। সাকেত কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে এক মহিলা তাঁর তালাক পাওয়ার কারণ হিসেবে জানিয়েছেন এমনটাই। আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে হুমা হাসিম জানিয়েছেন, ‘ও সবসময় পুত্রসন্তান চাইত। যার জেরে আমাকে একাধিকবার বাধ্য হয়ে গর্ভপাত করাতে হয়েছে। একদিন রাগের মাথায় আমার মেয়েদের হিংস্রভাবে মারছিল, আমি আটকাতে গেলে আমাকেও লাথি মারে। থুতু ছিটিয়ে দেয়। তারপরই হঠাৎ আমাকে তিন তালাক দেয়। গোটা ঘটনা পুলিশের কাছে জানাতে গেলেও তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। দুই মেয়ে ও আমার জীবনধারণের জন্য খোরপোশ চাইলেও সেটাও মেলেনি।’

হুমার স্বামী দানিশ হাসিম নয়াদিল্লির এক ব্যবসায়ী সংগঠনের কর্তা। হুমা আদালতে জানিয়েছেন, ১৩ জুলাই তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হয়ে এফআইআর লেখাতে চাইলেও তাঁর অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়নি। ঠিক মাস খানেক আগে গোটা ঘটনা হওয়ার পর তিনি বেশ কিছুদিন ভয়ে দিনযাপনের পর সাহস করে তদন্ত চেয়ে আইনি পথ ধরেন।

হুমার অভিযোগ দানিশের দিল্লির রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট যোগাযোগ থাকাতেই পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি। এমনকি পরে তাঁকে ও তাঁর মেয়েদের হুমকির মুখেও পড়তে হয়। আদালতে যাওয়ার আগে জাতীয় মহিলা কমিশনেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন হুমা।

সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাক নিষিদ্ধ করেছিল বছর চারেক আগেই। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে দেশের সংসদে পাশ হয়েছিল তিন তালাক বিরোধী আইন। তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিবাহ বিচ্ছেদের পক্ষে যথেষ্ট নয়, এমনকি সেই রাস্তায় কেউ হাঁটলে সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করার কথাও বলা হয়েছে আইনে।  কিন্তু আইন-আদালত করেও তিন তালাক নিষিদ্ধ করা যায়নি।

খোদ দেশের রাজধানীতে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার আগেও দিল্লিতে বেশ কয়েকটি এমন ঘটনা দেখা গিয়েছিল। তবে শুধু দিল্লিই নয়, দেশের প্রায় সব প্রান্ত থেকেই এমন ঘটনার খোঁজ পাওয়া যায়। যা থেকে বাদ নেই আমাদের রাজ্যও।