নয়াদিল্লি: ২০১৬-র রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলায় কানহাইয়া কুমার ও অন্যদের বিরুদ্ধে সোমবার ১২০০ পৃষ্ঠার চার্জশিট পেশ করল দিল্লি পুলিশ। সে বছর ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) ক্যাম্পাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ২০০১ সালের সংসদ চত্বর জঙ্গি হানা মামলার মাস্টারমাইন্ড আফজল গুরুর ফাঁসির নিন্দা ও ভারত-বিরোধী স্লোগান ওঠার অভিযোগে কানহাইয়া ও আরও অনেকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের হয়। জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সভাপতি কানহাইয়ার পাশাপাশি চার্জশিটে নাম রয়েছে দুই প্রাক্তন পড়ুয়া উমর খালিদ, অনির্বাণ ভট্টাচার্য্যের। অভিযুক্ত করা হয়েছে আকুইব হুসেন, মুজিন হুসেন, মুনিব হুসেন, উমর গুল, রাইয়া রসুল, বসির ভাট ও বাশারাত নামে কাশ্মীরি পড়ুয়াদের।


পুলিশ সূ্ত্রের খবর, পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ না থাকায় সিপিআই নেতা ডি রাজার মেয়ে অপরাজিতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের তত্কালীন সহ সভাপতি শেহলা রসিদ, রামা নাগা, আশুতোষ কুমার, বনজ্যোত্স্না লাহিড়ি সহ আরও ৩৬ জনের নাম চার্জশিটের ১২ নম্বর কলামে রয়েছে। মঙ্গলবার উপযুক্ত আদালতে চার্জশিটটি বিবেচনার জন্য ধার্য করেছেন মেট্রপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট সুমিত আনন্দ।

ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪ এ (দেশদ্রোহিতা), ৩২৩ (ইচ্ছা করে আঘাত করায় শাস্তি), ৪৬৫ (জালিয়াতির জন্য সাজা), ৪৭১ (জাল নথি বা ইলেকট্রনিক রেকর্ডকে আসল বলে ব্যবহার), ১৪৩ (বেআইনি জমায়েতের সদস্য হিসাবে থাকায় সাজা), ১৪৯ (অবৈধ জমায়েতে থাকা), ১৪৭ (দাঙ্গা বাঁধানোয় সাজা), ১২০ বি (ফৌজদারি ষড়যন্ত্র) ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে কানহাইয়া, বাকিদের।
সিসিটিভি, মোবাইল ফুটেজ ও অন্যান্য তথপ্রমাণও রয়েছে চার্জশিটে।
কানহাইয়া জনতাকে ভারত-বিরোধী স্লোগান দিতে তাতিয়েছেন বলে অভিযোগ পুলিশের।
জেএনইউ ক্যাম্পাসের ওই অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে বসন্ত কুঞ্জ (উত্তর) থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি ও বিজেপি সাংসদ মহেশ গিরির অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৬-র ১১ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪ এ ও ১২০ বি ধারায় মামলা দায়ের হয়। এবিভিপি দাবি করে, ওই অনুষ্ঠান রাষ্ট্রবিরোধী হবে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার অনুমতিও বাতিল করে। তা সত্ত্বেও অনুষ্ঠান হয়।
এদিকে কানহাইয়া ও চার্জশিটে নাম থাকা বাকিদের দাবি, দিল্লি পুলিশের এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কানহাইয়া অবশ্য বলেছেন, আমরা চাই চার্জ গঠন করে দ্রুত বিচার হোক যাতে সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। পুলিশ প্রমাণ হিসাবে অনুষ্ঠানের যে ভিডিওগুলি দিয়েছে, সেগুলিও দেখতে চাই আমরা। চার্জশিট পেশের খবর সঠিক হলে পুলিশ, মোদিজিকে ধন্যবাদ দিতে চাই। ৩ বছর বাদে ভোটের আগে চার্জশিট পেশে প্রমাণ, এর পিছনে আছে রাজনীতি। দেশের বিচার ব্যবস্থায় আমার ভরসা আছে।
উমর খালিদের বক্তব্য, যাবতীয় অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছি আমরা। ঘটনার তিন বছর বাদে চার্জশিট পেশের ঘটনা সংসদীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে মানুষের নজর ঘোরানোরই কৌশল। আমরা আদালতে এর মোকাবিলা করব।