নয়াদিল্লি: শতাধিক কিশোরী, শিশুকন্যাকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগে সম্প্রতি পূর্ব দিল্লির অশোক নগর থেকে ধরা পড়া সুনীল রাস্তোগির বিরুদ্ধে মামলায় কোনও ফাঁকফোকর রাখতে চাইছে না পুলিশ। এজন্য তার ডিএনএ ও ব্রেন ম্যাপিং পরীক্ষা করার কথা ভাবছে দিল্লি পুলিশ।  উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপুর, গাজিয়াবাদ, পূর্ব দিল্লির নিউ অশোক নগরে ছোট মেয়েদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ কবুল করেছে সে। তার যৌন প্রবৃত্তির শিকার হওয়া ৫৮টি মেয়েকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। ওদের ওপর কীভাবে যৌন নিগ্রহ চালানো হয়েছে, সেকথা জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে ওরা। এছাড়া আরও তিনটি মেয়ে পরিবারের লোকজনকে পাশে নিয়ে  সুনীলের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ পেশ করেছে। ওদের কাউন্সেলিংয়ের বন্দোবস্ত করছে পুলিশ।

তিন মেয়ে সমেত পাঁচ বাচ্চার বাবা হয়েও কী করে বাচ্চা মেয়েদের, যাদের কেউ কেউ হয়তো বা তারই মেয়েদের বয়সি, শ্লীলতাহানি করে মজা পেত সুনীল, ভেবে স্তম্ভিত সকলে। কিন্তু সুনীলের স্ত্রী ভাবনা রাস্তোগি তার সঙ্গে এক ছাদের তলায় ঘর করার সুবাদে বুঝে গিয়েছিলেন, স্বামীর বাইরের খোলসটা মানুষের হলেও ভিতরে লুকিয়ে রয়েছে ‘সবসময় যৌন শিকারে’র সন্ধানে থাকা এক পশু। সুনীলের কীর্তিকলাপ তাদের জীবন ‘অতিষ্ঠ করে দিয়েছে’ বলে জানিয়ে ভাবনা বলেছেন, সুনীলের মৃত্যুদণ্ড হলে এতটুকু কষ্ট হবে না তাঁর ও তাঁর সন্তানদের।

বোন টিউমারে আক্রান্ত ভাবনা বলেছেন, সুনীলের নোংরা কাজকর্মের প্রতিবাদ করলেও আমার ওপর অত্যাচার করত। যৌনতার তাড়নায় প্রায়ই কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেত অসহায় টার্গেটের সন্ধানে। দিল্লি-এনসিআরে ঘুরে বেড়াত। ৬ মাস আগে হলদওয়ানি জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যখন বাড়ি ফিরল, ওকে আমি বোঝালাম, এসব বন্ধ কর, একদিন তোমার মেয়েরাও তো কোনও বিকারগ্রস্তের লালসার শিকার হতে পারে! কিন্তু আমার কথা কানেই তোলেনি, যথারীতি অপরাধ চালিয়ে গিয়েছে।

গাজিয়াবাদের রাহুল বিহার এলাকায় দর্জির পেশা ছিল সুনীলের। সেখানেই বিয়ে হয় সুনীল, ভাবনার। বিয়ের পর থেকেই নিজের অপরাধমূলক কার্যকলাপের জন্য ঘনঘন বাসা বদলাত সুনীল। তার ১৬ বছরের দুই মেয়ে, ১৩, ৮ বছরের দুই ছেলে ও ৯ বছরের আরেকটি মেয়ে কখনও স্কুলে যায়নি। বড় মেয়েদুটি অন্যদের ফাইফরমাস খেটে মাকে সাহায্য করে।