নয়াদিল্লি: গত ৮ নভেম্বর ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপর একমাস কেটে গিয়েছে। নোট বাতিলের ঘোষণার দিন খোদ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, দেশ থেকে কালো টাকা দূর করাই এই পদক্ষেপের লক্ষ্য। নোট বাতিল হওয়ার পর সারা দেশের সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। এরপর সময়ের সঙ্গে এই সিদ্ধান্তের কারণ সম্পর্কে সরকারের অবস্থানেরও বদল দেখা যাচ্ছে। এখন নোট বাতিলের ক্ষেত্রে যুক্তি হিসেবে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র কথা ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকারি মহল থেকে ক্যাশলেস লেনদেনে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।
এখন দেখা যাক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)-এর প্রাক্তন কয়েকজন গভর্নর নোট বাতিল সম্পর্কে কী বলছেন। এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
বিমল জালান, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর
কালো টাকা ইতিমধ্যেই সোনা, সম্পত্তি এবং বিদেশি মুদ্রায় বদলে ফেলা হয়েছে। তাহলে কীভাবে নগদে কালো টাকা দেশে ফিরবে? নগদের সমস্যা মেটাতে সরকারকে ১০০ ও ৫০০ এবং ২০০০-এর নোটের মাঝে নতুন ছোট অঙ্কের নোট চালু করতে হবে। ব্যাঙ্কে পুরানো নোট বদল কমপক্ষে ছয়মাস ধরে চলা উচিত।
 ঊষা থোরাট, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর
নোট বাতিলের পর বিদেশের ব্যাঙ্কগুলিতে জমে থাকা টাকার মূল্য শূন্য হয়ে গিয়েছে। ৮০ শতাংশ অর্থ বদলানোর প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। দেশে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কম করে দু মাসের বেশি সময় লাগবে।
ডি সুব্বারাও,  রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর
কালো টাকার পরিমাণ সম্পর্কে কোনও বিশ্বাসযোগ্য তথ্য নেই। বিশ্বব্যাঙ্ক ২০০৭-এ ৩৭.৫ লক্ষ কোটি কালো টাকার থাকার কথা জানিয়েছিল, যা মোট অভ্যন্তরীন উত্পাদন (জিডিপি)-র ২৩.২ শতাংশ।
কে সি চক্রবর্তী, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর
পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে তা জিডিপি-র পক্ষে একেবারেই ভালো হবে না। এমনকি, এখনও দেশে নগদের অভাব রয়েছে। দেশে বেশিরভাগ লেনদেনই নগদে হয়। যদি পর্যাপ্ত নগদ বাজারে না থাকে তাহলে নিশ্চিতভাবেই জিডিপির হার কমবে।
কত টাকা কালো, তার নির্দিষ্ট কোনও পরিসংখ্যান নেই। গতকাল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত পটেলের বিবৃতিতে স্পষ্ট যে এখনও নগদের অভাব রয়েছে।
নগদের সমস্যা সমাধানে সরকারের উচিত জরুরী ভিত্তিতে দেশের প্রত্যন্ত অংশগুলিতে টাকা পাঠানোর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া উচিত।