নয়াদিল্লি: পকেটে মাত্র ৮০ টাকা। তাই নিয়েই ৩ হাজার কিলোমিটার ঘুরলেন মহিলা পর্যটক! অবিশ্বাস্য!


দিল্লি-স্থিত অলকা কৌশিক পেশায় ভ্রমণ-লেখিকা। নিজের ট্রাভেল-ব্লগের জন্য অলকাকে প্রায়ই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে হয়। সেইমতো, দক্ষিণ ভারতের সফরে গিয়েছিলেন অলকা। সঙ্গে ছিলেন তাঁর সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা মা।


অলকা জানান, গত ৮ তারিখ, যেদিন রাতে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সেদিন স্বামীর থেকে প্রথম খবরটা পান। দেখেন, তাঁর পার্সে মাত্র ৮০ টাকা রয়েছে!


নিজের ব্লগে বছর ৪৭-এর অলকা লেখেন, সেই সময় কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। তিনদিন পর যখন তিনি বাড়ি ফিরলেন, দেখলেন, তাঁর ব্যাগে তখনও রয়ে গিয়েছে সেই ৮০ টাকা।


কিন্তু কিভাবে তা সম্ভব হল? অলকা জানান, হোটেল খরচ তিনি ডেবিট কার্ড দিয়ে মিটিয়েছেন। বাকি যাতায়াতের খরচের অধিকাংশটাও 'ক্রেডিটে' করেন। তবে, ক্রেডিট কার্ডে নয়। এক্ষেত্রে তিনি সবচেয়ে বেশি সাহায্য পেয়েছিলেন তাঁর ট্রাভেল এজেন্ট রামুর কাছ থেকে।


অলকা জানান, রামুর সঙ্গে তাঁর পূর্ব-পরিচিতি ছিল না। অথচ, সেই রামু-ই তাঁদের পরিত্রাতা হয়ে দাঁড়ান। গোটা ট্যুরে ট্যাক্সি কোথাও জোগাড় করে দেওয়া বা নিজেই গাড়িচালকের ভূমিকা নিজের কাঁধে তুলে নেওয়া-- রামুর দৌলতে ‘ডিমোনেটাইজেশনের’ ধাক্কা গায়ে আঁচড় কাটতে পারেনি অলকাদের।


অলকা জানান, রামুর জন্য তাঁরা গোটা ট্যুর সম্পূর্ণ করতে পেরেছেন, তাও অধিকাংশ ক্রেডিটে। ট্যুর চলাকালীন যাবতীয় খরচ বহন করেন রামু। বাড়ি ফিরে রামুর দেওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় ১৩ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন অলকা। অলকার স্বীকারোক্তি, টাকার ঋণ হয়ত মিটিয়েছেন, কিন্তু, মানবিকতার যে ঋণ রামু দিয়ে গিয়েছেন, তা কখনও না মিটবে, না ভোলা যাবে।