ক্ষতিপূরণের ১৪ লক্ষ টাকা পাবেন গুরমিতের ডেরা গোষ্ঠীর সদস্য সেই দুই মহিলা, যাঁদের চাপ দিয়ে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়তে বাধ্য করেন তিনি।
আদালত কক্ষে সাজা ঘোষণা প্রক্রিয়া শুুরু হতেই ধর্ষণ মামলায় দোষী ঘোষিত বাবা রীতিমতো নাটক শুরু করে দেন বলে খবর। চেয়ারে না বসে মাটিতে বসে চোখে জল এনে পীড়াপীড়ি করতে থাকেন, যাতে সাজার মাত্রা কম হয়। হাতজোড় করে লঘু সাজার আবেদন করেন, কান্নাকাটিও করেন। নিজেকে নির্দোষ বলেও দাবি করেন তিনি।
তাঁর আইনজীবীরা সওয়াল করেন, ডেরা প্রধান ভাল কাজ করেছেন, সমাজসেবা করেছেন,তাছাড়া তাঁর শরীরও ভাল নেই। তাই তাঁকে যেন কঠিন সাজা দেওয়া না হয়।
তবে তাতে নরম হয়নি আদালতের কঠোর মনোভাব। যদিও সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন রাম রহিমের আইনজীবীরা।
সাজার রায় ঘোষণার পর গুরমিতকে জেলের পোশাক দেওয়া হয়। হয় শারীরিক পরীক্ষাও। তিনি নাকি রায় ঘোষণার পর রক্তচাপ মাপানোর দাবিতে হইচই করতে থাকেন।
রাম রহিমের ১০ বছরের জেলের সাজাকে স্বাগত জানালেন বাবা রামদেব। তাঁর প্রতিক্রিয়া, আইনের হাত থেকে নিস্তার নেই, প্রমাণ হল। নজির তৈরি করল আদালত।
আজ ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত ডেরা সাচা সৌদা প্রধানের সাজা ঘোষণা নিয়ে সকাল থেকেই তীব্র কৌতূহল ছিল। দুুপুরে বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক জগদীপ সিংহকে রোহতক জেলা সংশোধনাগারে এসে পৌছন সাজা ঘোষণার জন্য। তার আগে উত্তেজনায় কাঁপতে থাকে হরিয়ানার সিরসা, রোহতক। পুলিশ জানায়, কেউ যদি নিজের বা অন্য কারও ক্ষতি করার চেষ্টা করে দেখামাত্র গুলি করা হবে।
গোটা রোহতককে মুড়ে দেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীতে। এসে পৌঁছেছে ২৮ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী। ডেরা সমর্থকদের এই জেলায় ঢুকতেই দেওয়া হচ্ছে না।
সিরসায় ডেরা সাচা সৌদার ৭০০ একর জমির ওপর সদর দফতরে ছিলেন অন্তত ৩০,০০০ রাম রহিম অনুসারী। গতকাল সন্ধে থেকে তাঁদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া শুরু হয়। সন্ধে ছটার সময় নিরাপত্তা বাহিনী তাঁদের বার করে নিয়ে যাওয়ার জন্য ১০০টি বাস নিয়ে আসে।
পুলিশ জানায়, তাদের মূল লক্ষ্য রায়দানের সময় নিরাপত্তার এতটুকু যেন বিচ্যুতি না হয় তা দেখা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনমত ব্যবস্থা নেওয়ার স্বাধীনতা নিরাপত্তা বাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। হরিয়ানার সব স্কুল-কলেজ আজ বন্ধ, পঞ্জাবেরও ১৩টি জেলার স্কুল-কলেজ বন্ধ।
দিল্লিতে গুজবে কান না দেওয়ার জন্য নির্দেশিকা জারি করে পুলিশ। স্কুল খোলা রয়েছে, যান নিয়ন্ত্রণেরও কড়াকড়ি হয়নি। তবে হরিয়ানার পার্শ্ববর্তী গাজিয়াবাদ ও নয়ডার বেশিরভাগ স্কুল বন্ধ রয়েছে।
রাম রহিমের জেড প্লাস নিরাপত্তা ব্যবস্থার অন্তর্গত ৫ নিরাপত্তা রক্ষীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাম রহিমকে জেলে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে তারা। তাদের দাবি ছিল, পুলিশের গাড়িতে নয়, রাম রহিম জেলে যাবেন নিজের গাড়িতে চড়ে। তাদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, দেশদ্রোহিতা, অপরাধীকে পালাতে সাহায্য করা ও অস্ত্র আইনে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।