চন্ডীগড়: স্বঘোষিত গডম্যান গুরমিত রাম রহিমের সাজা ঘোষণা হওয়ার পর নতুন করে অশান্তি ছড়ানোর আশঙ্কায় সিরসায় রুট মার্চ করল সেনাবাহিনী। হিংসার আশঙ্কায় পঞ্জাবের বারনালায় আজ রাত ৯টা থেকে কাল সকাল ৯টা পর্যন্ত কার্ফু জারি করা হবে।


এদিন সাজা ঘোষণার পরপরই সিরসার কাছে কোটলি গ্রামে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা একটি লাক্সারি গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। ডেরা সাচা সৌদার সদর দপ্তর থেকে ১০ কিমি দূরে এ ঘটনার পিছনে গুরমিত রাম রহিমকে দোষী ঘোষণার রায়ে ক্ষুব্ধ ডেরার লোকজনের হাত রয়েছে বলেই সন্দেহ প্রশাসনের।

এক পুলিশ অফিসার বলেন, ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গ্রামের সরপঞ্চের বক্তব্য রেকর্ড করা হচ্ছে। কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, কোটলি গ্রামে দুটি গাড়িতে আসে কিছু লোকজন। একটি গাড়ি থেকে একদল লোক নেমে এসে বিলাসবহুল গাড়িতে আগুন লাগিয়ে চম্পট দেয়।

এদিন দুপুরে ২০০২ সালের পুরানো ধর্ষণ মামলায় দোষী রাম রহিমের কারাবাসের সাজা ঘোষিত হতেই হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর খট্টর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জরুরি ভিত্তিতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজিপি ও অন্যান্য শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে। খট্টর সাধারণ মানুষকেও, বিশেষত ডেরা সমর্থকদের শান্ত থাকার আবেদন করেন।

গত শুক্রবার গুরমিতকে দোষী ঘোষণার পর নজিরবিহীন তাণ্ডব চালিয়েছিল তাঁর ভক্তরা। হরিয়ানার মূলত পাঁচকুলায় অন্তত ৩৫ জন নিহত হয় হিংসায়। আজ তার পুনরাবৃত্তি এড়াতে সিবিআই বিচারপতি জগদীপ সিংহ সুনারিয়ার যে জেলে রামরহিমকে রাখা হয়েছিল, সেখানে তৈরি অস্থায়ী আদালতে গিয়ে সাজা ঘোষণা করেন।

রাজনৈতিক স্বার্থ পূরণেই আগাম কঠোর পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিমত জানিয়ে শুক্রবারের হিংসার জন্য খট্টর সরকারকে একহাত নিয়েছে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট। সে কথা মাথায় রেখেই খট্টর আজ বলেন, যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনকেও তিনি পরিস্থিতি অনুযায়ী কঠোর হতে বলেন। পাশের রাজ্য পঞ্জাবেও জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট।

পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ। ভাতিন্ডা, সাঙ্গরুর, পাতিয়ালা, মোগা-যেসব জায়গায় ডেরার প্রচুর অনুগামী আছে, সেখানে কড়া নজর রয়েছে পুলিশের। পঞ্জাব ও হরিয়ানায় আজ স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখা হয়। মঙ্গলবার পর্যন্ত দুই রাজ্যেই বন্ধ রাখা হয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা।

এদিকে হরিয়ানা প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, ডেরার যাবতীয় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করে সেই অর্থ দিয়ে শুক্রবারের হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে।