নয়াদিল্লি ও পানাজি: গোয়া নির্বাচনে দলের ভরাডুবির জন্য আক্রমণের নিশানায় প্রবীণ কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ নিজের ঘাড় থেকে সব দায় ঝেড়ে ফেলতে উদ্যোগী হলেন।


এদিন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটকে হাতিয়ার করে একের পর এক মন্তব্য করেন এই নেতা। যেখানে তিনি দাবি করেন, তাঁর প্রস্তাব মানা হয়নি বলেই না কি আজ গোয়ায় সরকার গঠনে ব্যর্থ হল কংগ্রেস।


এদিন টুইটারে দিগ্বিজয় লেখেন, তাঁর প্রস্তাব অনুযায়ী যদি গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টির সঙ্গে গাঁটছড়া হলে, আজ কংগ্রেস শাসন থাকত এই সৈকত-রাজ্যে। তিনি বলেন, কৌশল-নির্ধারক হিসেবে আমি বলেছিলাম বাবুশ মনসেরেতের নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড গোয়ান পার্টি ও  বিজয় সরদেশাইয়ের নেতৃত্বাধীন গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টির সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষ জোট করা হোক।


দিগ্বিজয় যোগ করেন, ইউনাইটেড গোয়ানের সঙ্গে জোট হওয়ায় পাঁচটির মধ্যে চারটি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল বাবুশের দল। তারমধ্যে তিনটিতে জয়ী হয়েছে তারা। অন্যদিকে, গোয়া ফরোয়ার্ডের ক্ষেত্রে রাজ্য কংগ্রেস নেতাদের একাংশ ‘অন্তর্ঘাত’ করেছে বলে জোট গঠন সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ দিগ্বিজয়ের।


এখাননেই থেমে থাকেন নি দিগ্বিজয়। তাঁর দাবি, ২০১৩ সালে যখন তিনি গোয়ার দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তখন সেরাজ্যের প্রদেশ নেতৃত্ব পুরোটাই অগোছালো ছিল। তাঁর অভিযোগ, গোয়ায় খোদ শীর্ষ কংগ্রেস নেতারা মনে করেছিল দল ২-৪ আসনের বেশি পাবে না। কিন্তু, একক বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে আসে কংগ্রেস।


প্রসঙ্গত, দিগ্বিজয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গোয়ায় সর্ববৃহৎ একক দল হওয়া সত্ত্বেও, পরিষদীয় দলনেতা বাছতে অযথা বিলম্ব করেন তিনি। যার ফলস্বরূপ, বিজেপি সেই জয়গায় তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিয়ে মনোহর পর্রীকরকে দিল্লি থেকে উড়িয়ে এনে এবং স্থানীয় দলগুলির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে সরকার গঠন করে ফেলে।


সূত্রের খবর, এই নিয়ে দিগ্বিজয়ের ওপর ‘ক্ষুব্ধ’ কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। এদিন তারই সাফাই দিয়েছেন প্রবীণ নেতা। বলেছেন, গোয়ায় ১২ তারিখ দলনেতা নির্বাচিত হয়। কিন্তু, রাজ্যপাল তাঁর আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন বলে দাবি দিগ্বিজয়ের। তিনি বলেন, এরপরও আমাকে ‘ভিলেন’ সাজানো হচ্ছে। জনতাই এর বিচার করবেন, কটাক্ষ দিগ্বিজয়ের।


যদিও, এআইসিসি সাধারণ সম্পাদককে পাল্টা একহাত নেন গোয়া কংগ্রেসের সদ্য দলত্যাগী নেতা বিশ্বজিৎ রাণে। তাঁর মতে, যে ভুল করেছেন দিগ্বিজয় তারপর তো ওনার রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়া উচিত। তাঁর দাবি, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেও, কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি দল। সেই জায়গায় ভিডিও কনফারেন্সর মাধ্যমে জোট করে সরকার গড়ে ফেলে বিজেপি।


এদিকে, গোয়ায় সরকার গঠনের বিতর্ক আছড়ে পড়ল সংসদেও। এদিন গোয়ার রাজ্যপাল মৃদুলা সিনহার একটি মন্তব্যকে ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্যসভা। কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, সাংবিধানিক নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিজেপিকে সরকার গঠনে আমন্ত্রণ জানান রাজ্যপাল। এক্ষেত্রে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রাজ্যপালের একটি সাক্ষাতকারকে হাতিয়ার করে কংগ্রেস। যেখানে অভিযোগ, মৃদুলা বলেছেন, তিনি জেটলির সঙ্গে কথা বলেই বিজেপিকে আমন্ত্রণ জানান। এর জেরে এদিন সাময়িক মুলতুবি হয়ে উচ্চকক্ষ।