জন্মের পর থেকে ২২ বছর ধরে বাড়িতে শিকলে বাঁধা ২২ বছরের প্রতিবন্ধী, প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চাইলেন মা
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
24 Oct 2017 03:51 PM (IST)
প্রতীকী চিত্র
রুদ্রপ্রয়াগ: জন্ম থেকে ২২ টা বছর কেটেছে ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে হামাগুড়ি দিয়েই। জন্মের পর থেকেই বাড়িতেই চেন দিয়ে বেঁধে রাখা হয় তাকে। আসলে ২২ বছরের পঙ্কজ রানা কোয়াড্রিপেরেসিস রোগের শিকার। এতে তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলি জন্মের পর থেকেই অচল। অ্যাফাসিয়া রোগের কারণে কথাও বলতে পারে না সে। দরিদ্র পরিবার। ছেলের এই কঠিন রোগের চিকিত্সার খরচ চালানো ভার। তাই বিধবা মা পঙ্কজকে বাড়ির ভেতরে বেঁধে রেখেই কাজে যান।
রুদ্রপ্রয়াগ জেলার জাখোলি গ্রামে পঙ্কজের মা সরোজ রানা ছেলেকে নিয়ে মহা সমস্যার মধ্যে দিন গুজরান করছেন। সরোজ বলেছেন, ওকে বেঁধে রাখা ছাড়া উপায় কী! হামাগুড়ি দিয়ে যদি বাইরে বেরিয়ে যায় তাহলে তো ও পশুজন্তুর মুখে চলে যেতে পারে। এখানে মাঝেমধ্যেই চিতাবাঘ উপদ্রব করে। ওর চিন্তায় বাইরে থাকলে ভয় লাগে।
সরোজের বাবা আট বছর আগেই মারা গিয়েছেন। পঙ্কজ সহ তিন সন্তানের ভরণপোষণের ভার এখন সরোজের কাঁধে। তাই তাঁকে প্রতিদিনই মজুরি করতে বাইরে যেতে হয়।
সরোজ বলেছেন, প্রথমে তাঁরা বুঝতেই পারেননি পঙ্কজের কী হয়েছে। অনেক মন্দির ও হাসাপাতালে ওকে নিয়ে গিয়েছেন সরোজ ও তাঁর প্রয়াত স্বামী। কিন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বোধহয় ওর কপালেই এমনটা রয়েছে।
সরোজ বিধবা ভাতা পান। কিন্তু তা নিয়মিত হাতে পাওয়া যায় না। পঙ্কজের জন্যও শারীরিক প্রতিবন্ধী ভাতা বাবদ ১০০০ টাকা আসে। ওই টাকা ও মজুরি করে সরোজের সামান্য রোজগারেই সংসার চলে।
এখন ছেলের সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তিনি পঙ্কজ ও এলাকার অন্যান্য শিশুদের এই দুরবস্থা সম্পর্কে তাঁকে জানাবেন সরোজ।
সরোজ বলেছেন, কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী কেদারনাথে এসেছিলেন। তিনি আবার আসবেন জানিয়েছেন। পরের বার আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাই।
‘দেবভূমি’তে দরিদ্র পরিবারের অসুস্থ শিশুরা কীভাবে বেঁচে রয়েছেন, তা নিজের চোখে দেখুন প্রধানমন্ত্রী। এমনটাই চান সরোজ। সরকার অন্তত এই পাহাড় এলাকায় কিছু পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়তে পারে, যাতে চিকিত্সার জন্য ওই শিশুদের বাবা-মায়েদের সমতলে যেতে না হয়। কারণ, চিকিত্সার জন্য সমতলে যাওয়াটা এত ব্যয়সাপেক্ষ যে তাঁদের পক্ষে তা বহন করা সম্ভব নয়।
চিকিত্সা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাহাড়ে যে সব শিশুর বাড়িতেই জন্ম হয়, তাদের মধ্যে অনেক শিশুরই পঙ্কজের মতো দশা হয়।
সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, উত্তরাখণ্ডে প্রাতিষ্ঠানিক (হাসপাতালে) প্রসবের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু এখনও ৩৭ শতাংশ ক্ষেত্রে বাড়িতেই সন্তান প্রসব হয়।এর ফলে নবজাতক শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়।
দেশ (nation) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -