ইটানগর: যত কাণ্ড অরুণাচলে। সংখ্যালঘু হয়ে পড়া সরকার বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টায় আস্থাভোটের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকিকে সরিয়ে দিল কংগ্রেস। তাঁর জায়গায় নিয়ে এল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দোরজি খান্ডুর ছেলে পেমা খান্ডুকে। আর মুখ্যমন্ত্রী বদলের সঙ্গে সঙ্গে আগের রাগ ভুলে দলে ফিরে এলেন বিদ্রোহী নেতা কালিখো পুল, সঙ্গে আরও ৩০জন বিদ্রোহী বিধায়ক। নেতা বদলের যে প্রক্রিয়া চলেছে, তাতে বিদ্রোহী বিধায়করা সমেত মোট ৪৪জন কংগ্রেস বিধায়ক যোগ দেন, অর্থাৎ, ৫৮ সদস্যের বিধানসভায় ৪৪জনই কংগ্রেসের পক্ষে থাকায় আস্থাভোটে জিততে তাদের কোনও সমস্যা না হওয়ারই কথা। উল্টোদিকে বিজেপির ১১জন বিধায়ক, নির্দল ২জন। স্পিকার নাবাম রেবিয়াকে নিয়ে কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ৪৫ ছুঁয়ে ফেলছে।


নতুন মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণের ঝক্কি থাকায় আস্থাভোট পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতিতে পরিষ্কার, অরুণাচলে কংগ্রেস সরকার আপাতত বেঁচে গেল।

নভেম্বরে কালিখো পুলের নেতৃত্বে নাবাম টুকি সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন ২১জন কংগ্রেস বিধায়ক। বাইরে থেকে বিজেপির ১১ বিধায়কের সমর্থনে নতুন করে সরকার গঠন করেন কালিখো পুল। কিন্তু গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পুনর্বহাল হয় টুকি সরকার। ভারপ্রাপ্ত রাজ্যপাল তথাগত রায় শনিবার নাবাম টুকিকে আস্থাভোটে যাওয়ার নির্দেশ দেন। সরকার পুনর্বহাল হওয়ার পরেই তলে তলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে বোঝাপড়ায় যাওয়ার চেষ্টা শুরু করে কংগ্রেস। টুকিকে সরিয়ে দেওয়ার শর্তে কালিখোকে ফিরিয়ে আনে তারা। নয়া মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু দাবি করেছেন, আর দলের মধ্যে কোনও অশান্তি নেই। সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর হস্তক্ষেপে কংগ্রেস আবার জোটবদ্ধ হয়েছে।

গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টের রায় ও এদিন বিদ্রোহী কংগ্রেসিরা ফের আগের দলে ফিরে যাওয়ায় বেশ ভালরকম মুখ পুড়েছে কেন্দ্রের। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু অবশ্য দাবি করেছেন, গোটা ঘটনা কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, এতে বিজেপি বা কেন্দ্রের কিছু করার নেই। তাঁর কথায়, কালিখো সরকারও বিজেপির ছিল না, বিজেপি শুধু বাইরে থেকে সমর্থন জানিয়েছিল। অশান্তি যা হয়েছিল, তা কংগ্রেসের ভেতরে নেতৃত্ব নিয়ে খেয়োখেয়ির জন্য। এখন আবার ঘরের ছেলেরা ঘরে ফিরে গেছেন, এতে বিজেপি কী করবে?