নয়াদিল্লি: ৩ কোটি টাকার বেশি মূল্যের বিদেশি মুদ্রা পাচার করতে গিয়ে ধৃত জেট এয়ারওয়েজের বিমানসেবিকা বড়সড় আন্তর্জাতিক হাওয়ালা সিন্ডিকেটের সদস্য। এমনটাই জানাল ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গতকাল হংকংগামী জেট এয়ারওয়েজের ওই বিমানসেবিকাকে আটক করেন গোয়েন্দারা। তাঁর চেকড-ইন ও হ্যান্ড ব্যাগেজ পরীক্ষা করতেই গোয়েন্দাদের চক্ষু চড়কগাছ। অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে মোড়া অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ৪ লক্ষ ৮০ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য প্রায় সওয়া তিন কোটি টাকা।
জেরায় মহিলা স্বীকার করেন, তিনি এক আন্তর্জাতিক হাওয়ালা সিন্ডিকেটের হয়ে কাজ করেন। অতীতে তিনি দিল্লির এক হাওয়ালা অপারেটের থেকে বহুবার বিদেশি মুদ্রা পাচার করেছেন। ডিআরআই জানিয়েছে, গ্রেফতার বিমান সেবিকা কালো টাকার বদলে দেশে সোনা নিয়ে আসার কাজ করছিলেন।
তিনি জানান, দিল্লির বিবেক বিহার এলাকার বাসিন্দা অমিত মালহোত্র নামে এই চক্রের একজন তাঁর সঙ্গে আলাপ করে এই কাজের দায়িত্ব দেয়। চোরাচালান হওয়া গোটা টাকার ১ শতাংশ কমিশন হিসেবে পেতেন তিনি। গত ২ মাসে হংকং-এ সাতটি উড়ানে তিনি মোট ১০ লাখ মার্কিন ডলার পাচার করেছেন বলেও জানান ওই বিমানসেবিকা।
কিন্তু কীভাবে এত টাকা বিমানকর্মীদের নজর এড়িয়ে সহজে পাচার হত? জানা গিয়েছে, টাকাগুলি তিনি মুড়ে ফেলতেন অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে, ফলে তা স্ক্যানারের চোখে পড়ত না।
জেরায় ওই বিমানসেবিকা আরও জানান, দিল্লির বেশ কয়েকজন স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের থেকে এধরনের বিদেশি মুদ্রা সংগ্রহ করত মালহোত্র। এরপর বিভিন্ন বিমানসেবিকার মাধ্যমে তা পাচার করত নির্ধারিত জায়গায়। সেখান থেকে বেআইনিভাবে সোনা দেশে নিয়ে আসা হত।
ডিআরআই জানতে পেরেছে, জেট এয়ারওয়েজের বেশ কয়েকজন ক্রু সদস্যের সঙ্গে ৬ মাস আগে আলাপ করে মালহোত্র। মঙ্গলবার মালহোত্রকেও গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের জেরা করে গোটা চক্রের বিষয়ে জানার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এদিন ধৃতদের আদালতে পেশ করা হলে, তাঁদের ২ দিনের জন্য বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠান বিচারক। জেট এয়ারওয়েজও বিবৃতি দিয়ে স্বীকার করে নিয়েছে এ কথা। জানিয়েছে, তদন্ত রিপোর্ট হাতে এলে বিমানসংস্থা এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।