নয়াদিল্লি:  হরিয়ানার ৩০ বছরের কৃষক জিতেন্দর যা করলেন, তা করার মতো সাহস বা সদিচ্ছা কত জনের রয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। জিতেন্দর গণধর্ষণের শিকার এক তরুণীকে বিয়ে করেছেন। শুধু তাই নয়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে স্ত্রীর আইনি লড়াইয়ে সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন জিতেন্দর।

এ ধরনের অনুপ্রেরণামূলক ঘটনা কদাচিত্ শোনা যায়। ধর্ষিতার প্রতি যে প্রচলিত সামাজিক  দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, তার বিরুদ্ধে গিয়ে এ ধরনের সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ একেবারেই সহজ নয়। সমাজের বদ্ধমূল নেতিবাচক ধারণা ভেঙে-গুঁড়িয়ে বেরিয়ে আসার এই মানসিকতা দৃষ্টান্তমূলক।

তত্ত্ব কথা নয়, জিতেন্দর তাঁর কাজের মাধ্যমেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, ধর্ষণের শিকাররা আদৌ অস্পৃশ্য নয়। সারাজীবনের জন্য তাঁদের হাত ধরে চলতে পারেন।

২০১৫-র ডিসেম্বরে গণধর্ষণের শিকার তরুণীকে বিয়ে করেছেন জিতেন্দর। বেশ সুখেই কাটছে তাঁদের দাম্পত্য জীবন। নির্যাতিতার পরিবার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন জিতেন্দরের পরিবারের কাছে। সানন্দে, সাগ্রহে সেই প্রস্তাবে সায় দিয়েছিল তাঁর পরিবার।

স্ত্রীকে এখন আইন নিয়ে পড়াশোনার জন্য কলেজে ভর্তি করেছেন জিতেন্দর। তাঁর কথায়, ও বিচার বিভাগে চাকরি করতে পারে বা আইনজীবী হিসেবে অন্য নির্যাতিতাদের পাশে দাঁড়াতে পারে। ইউথ এগেনস্ট রেপ নামে তাঁরা একটি সংগঠনও ইতিমধ্যেই গড়ে তুলেছেন।

এক কোচিং সেন্টার মালিক নীরজ ও চারজন জিতেন্দরের স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছিল। এই অপরাধে সামিল ছিল এক মহিলাও।

অভিযুক্তরা জিতেন্দরের বিরুদ্ধেও মিথ্যে মামলা দায়ের করে টাকার দাবি করেছে।

জিতেন্দরের স্ত্রী বলছেন, অন্যান্য নির্যাতিতারা তাঁর মতো ভাগ্যবতী নন। বিয়ের পর থেকে সেই যন্ত্রনাকর ঘটনা নিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া অন্য কোনও সময় তাঁদের মধ্যে কথা হয় না। স্বামী এভাবে পাশে দাঁড়ানোর অভিযুক্তদের বিদ্বেষ এখন জিতেন্দরের ওপর পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্ত্রী।

এই ঘটনায় জিতেন্দর হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরের দ্বারস্থ হয়েছেন।