নয়াদিল্লি: তিন বিতর্কিত কৃষি আইন নিয়ে দিল্লির সীমানায় কৃষকদের আন্দোলন আজ ২১ দিনে পড়ল। এই আন্দোলন আরও সংঘবদ্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আজ বুধবার নয়ডা এবং দিল্লির মধ্যে সংযোগকারী চিল্লা সীমানা সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি। গতকাল সিংঘু সীমানায় সাংবাদিক সম্মেলন করে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
কৃষক নেতারা জানিয়েছেন, আন্দোলন চলাকালে যে কৃষকরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সারা দেশের গ্রামগুলিতে তাঁদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আগামী ২০ ডিসেম্বর সভা হবে।
এরইমধ্যে কৃষকদের সঙ্গে সরকারের এই টানাপড়েনের মাঝে আজ সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদনের শুনানি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এত মানুষের জমায়েত করোনার সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়াতে পারে। ফলে এই আন্দোলন উঠিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসনকে অনুমতি দেওয়া হোক, এই মর্মে আবেদন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীও জানিয়েছেন গণতান্ত্রিক ভাবে আন্দোলন করতেই পারেন, কিন্তু করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে করোনা বিধি মেনে চলতে হবে।
আন্দোলনের ২০ তম দিনে পৃথক দুর্ঘটনায় বিক্ষোভ প্রদর্শন থেকে ফেরার পথে চার কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। পঞ্জাবে এই দুটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। দিল্লির সীমানায় বিক্ষোভ কেন্দ্রে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও একজনের।
এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত সেপ্টেম্বরে সংসদে গৃহীত কৃষি আইনের পক্ষে জোরাল সওয়াল করেছেন। তিনি এই আইনগুলিকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এ ব্যাপারে কোনও সংশয় থাকলে সরকার তা দূর করতে প্রস্তুত। তিনি বলেছেন, কোনও রকম সংশয় থাকলে তার সমাধান করতে সরকার ২৪ ঘন্টা প্রস্তুত।

যদিও কৃষক সংগঠনের নেতারা স্পষ্ট জানিয়েছেন, সরকারকে ওই তিন আইন বাতিল করতেই হবে এবং তা করা হলেই পরবর্তী আলোচনা হতে পারে। সরকার ও আন্দোলনকারীদের পাঁচ দফার বৈঠকের পরও কোনও রফাসূত্র মেলেনি।
কৃষিমন্ত্রী তোমর বলেছেন, সমস্যার সমাধানের জন্য সরকার প্রকৃত কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে খোলামনে আলোচনা চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক।
এরইমধ্যে, উত্তরপ্রদেশের ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ন (কিষাণ) কৃষি আইনগুলি ও এমএসপি সম্পর্কে তাদের প্রস্তাব সম্বলিত স্মারকলিপি জমা দিয়েছে এবং এখন প্রতিবাদ সমাপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই সংগঠন উত্তরপ্রদেশে জেলা পর্যায়ে প্রতিবাদ করছিল। তারা অবশ্য জাতীয় রাজধানীর সীমানা এলাকাগুলি বিক্ষোভ প্রদর্শনকারী ৪০ কৃষক সংগঠনের আন্দোলনের অংশ নয় এবং কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনাতেও যোগ দেয়নি।