নয়াদিল্লি: নরেন্দ্র মোদি সরকারের নতুন তিনটি কৃষি আইনের প্রতিবাদে কৃষকদের আন্দোলন জারি রয়েছে। ওই আইন প্রত্যাহার না-হওয়া পর্যন্ত তাঁরা যে লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে যাবেন না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন কৃষক নেতৃত্ব। যদিও কেন্দ্র ইতিমধ্যেই বুঝিয়ে দিয়েছে, কৃষি আইন বাতিল তারা করবে না। দুই তরফের অনমনীয় মনোভাবে প্রভাব পড়ছে দেশের অর্থনীতিতে। এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশের বণিকসভাগুলি। তারাও স্বীকার করে নিয়েছে, কৃষক আন্দোলন দেশের অর্থনীতিতে বড়সড় ধাক্কা দেবে।
গত তিন সপ্তাহ ধরে দিল্লি সীমানার একাধিক জায়গা অবরুদ্ধ করে রেখেছেন আন্দোলনরত কৃষকেরা। হাজার হাজার কৃষক কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইনের প্রতিবাদে অবস্থান করছেন। কৃষক সংগঠনগুলি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কেন্দ্র যতক্ষণ না ওই নয়া আইন প্রত্যাহার করছে, ততক্ষণ দিল্লির সীমানা থেকে তারা সরবে না। এই আন্দোলনের জেরে প্রতিদিন অর্থনীতিতে কয়েক হাজার টাকার ক্ষতি হচ্ছে. প্রভাব পড়ছে কেন্দ্রীয় রাজস্বের উপরেও।
বণিকসভা অ্যাসোচেম জানিয়েছে, কৃষক বিক্ষোভ দেশের অর্থনীতিতে যথেষ্টই নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এই বণিকসভার দাবি, চলতি কৃষক আন্দোলনের জেরে প্রতি দিন অর্থনীতিতে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। তিন সপ্তাহ ধরে আন্দোলনের জেরে কমপক্ষে ৭৫ হাজার কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। অ্যাসোচেম জানিয়েছে, পঞ্জাব, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ ও জম্মু-কাশ্মীরের অর্থনীতিকে এই কৃষক আন্দোলন সবচেয়ে বেশি ধাক্কা দিয়েছে। এই বণিকসভার আবেদন, নয়া কৃষি আইন নিয়ে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তা নিরসনে কেন্দ্র এবং কৃষক সংগঠনগুলি উদ্যোগী হোক। পরিবহণক্ষেত্রেও বড়সড় প্রভাব পড়েছে।
এসোচামের প্রধান নিরঞ্জন হিরানন্দনী বলেছেন, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ এবং জম্মু ও কাশ্মীরের সম্মিলিত অর্থনীতি প্রায় ১৮ লক্ষ কোটি টাকা। কৃষকদের আন্দোলনের জেরে রাস্তা, টোল প্লাজা ও রেল পরিষেবা বন্ধ থাকায় অর্থনৈতিক কাজকর্ম কার্যত থমকে গিয়েছে। বস্ত্র, গাড়ি উপাদান, সাইকেল, ক্রীড়া সামগ্রীর মতো শিল্পগুলি ক্রিসমাসের আগে তাদের রফতানি অর্ডারগুলি পূরণ করতে সক্ষম হবে না, তা নিয়ে রীতিমতো আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আর এক বণিকসভা সিআইআই বলছে, কৃষক আন্দোলনের কারণে সরবরাহ চেইন ব্যাহত হয়েছে। আগামী দিনে, এর প্রভাব অর্থনীতিতে দেখা যাবে। এটি অর্থনীতির পুনর্জাগরণকে প্রভাবিত করতে পারে।