কোল্লাম: কেরলের কোল্লাম পুত্তিঙ্গল মন্দিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। জখমের সংখ্যা ৩০০-র বেশি। তাঁদের মধ্যে অনেকেই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণ কী, আর কার দোষে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল।
১. মন্দিরে যেখানে বাজি মজুত রাখা হয়েছিল সেখানেই ফুলকি থেকে  আগুন ছড়িয়ে পড়ে
বার্ষিক উত্সব উপলক্ষ্যে মাঝরাতে মন্দির চত্বরেই আতসবাজির প্রদর্শণী শুরু হয়। উত্সবে সামিল হতে আর বাজি পোড়ানো দেখতে মন্দিরে ১০ থেকে ১৫ হাজার লোক হাজির ছিলেন বলে জানা গেছে। রাত তিনটে নাগাদ বাজির ফুলকি মন্দিরের স্টোররুমে এসে পড়ে। সেখানেই মজুত ছিল প্রচুর বাজি। ফুলকি পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিস্ফোরণ হয়। একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে মন্দির চত্বর। বেশ কিছুক্ষণ ধরে এই বিস্ফোরণ চলে।


২. মন্দিরে অপ্রতুল অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা
স্টোররুমে ফুলকি পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিস্ফোরণ এবং আগুন ধরে যায়। জানা গেছে, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই চলছিল আতসবাজির প্রদর্শনী। সেজন্য অগ্নিনির্বাপনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। ছিল আপত্কালীন পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত।  বিস্ফোরণ ও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর সেজন্য উদ্ধারকাজ সঙ্গে সঙ্গে শুরু করা যায়নি। আচমকাই সবকিছু ঘটে যায়। ঘটনাস্থলে মোতায়েন পুলিশকর্মীরাও কিংকর্তব্যমিমূঢ় হয়ে পড়েন। কয়েকজন পুলিশকর্মীও প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গেছে।

৩. বাজির ভাণ্ডারে আগুন ধরে যাওয়ায় আতঙ্ক
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনার পরেই ঘটনাস্থলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রাণভয়ে দৌড়োদৌড়ি শুরু করেন লোকজন। পদপিষ্ট হয়েও মারা যান বেশ কয়েকজন।
৪. বাজির সুরক্ষা ব্যবস্থাও সঠিক ছিল না
প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই মন্দিরে আতজবাজি মজুত করা হয়। কিন্তু এগুলিকে সুরক্ষিত রাখার কোনও ব্যবস্থাই ছিল না। যেখানে বাজি পোড়ানো হচ্ছিল সেখান থেকে ভাণ্ডারের দূরত্ব একেবারেই নগন্য ছিল। বাজির ফুলকি ভাণ্ডারের দিকে উড়ে আসছিল, কিন্তু মন্দির কর্তৃপক্ষ সচেতন হয়নি। আর শেষপর্যন্ত ভয়াবহ ঘটনা ঘটে যায়।
৫. পুলিশ, মন্দির কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের গাফিলতি
পুলিশ মন্দিরে আতসবাজি পোড়ানোর অনুমতি দেয়নি। কিন্তু তা স্বত্ত্বেও মন্দিরে আতসবাজি কীভাবে পৌঁছল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যখন বাজি পোড়ান হচ্ছিল, তখনও পুলিশ মোতায়েন ছিল। তারপরও পুলিশ বাজি পোড়ানো বন্ধ করতে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তাছাড়াও, মন্দির কর্তৃপক্ষও নিরাপত্তা নিয়ে একেবারেই উদাসীন ছিল। এ সবেরই ফলশ্রুতি, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।