গুয়াহাটি: অসমে বন্যা পরিস্থিতি রীতিমত জটিল হয়ে উঠেছে। প্রচণ্ড বৃষ্টিতে ফুলে ফেঁপে উঠে নদীগুলি ভাসিয়ে দিয়েছে অরুণাচল প্রদেশ ও ভুটান সংলগ্ন এলাকা। ১৯লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত লখিমপুর, বঙ্গাইগাঁও, জোরহাট, ধেমাজি, বরপেটা, গোয়ালপাড়া, ধুবড়ি, দারাং, মোরিগাঁও ও শোণিতপুর। এছাড়াও শিবসাগর, কোকরাঝাড়, ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়া, বিশ্বনাথ, নলবাড়ি, বাকসা এবং গোটা কামরূপ জলের তলায়। গুয়াহাটিতে ফুঁসে উঠেছে ব্রহ্মপুত্র, বইছে বিপদসীমার ওপর দিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেওয়াল শনিবার সকালে ধুবড়ি ও চিরাং জেলার বন্যাবিধ্বস্ত এলাকাগুলি ঘুরে দেখেছেন। এদিনই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহর নগাঁও, মোরিগাঁও ও কাজিরাঙা পরিদর্শনে আসার কথা। অসমের মু্খ্যমন্ত্রী ও অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে তিনি বৈঠকও করবেন।


বন্যা আক্রান্ত এলাকাগুলিতে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। জেলা প্রশাসনকে এ ব্যাপারে সাহায্য করছে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ ও সেনা। বিপন্ন মানুষকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে তারা। কাজিরাঙা অভয়ারণ্যও এখন জলের তলায়। ব্রহ্মপুত্র ভাসিয়ে নিয়ে গেছে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের মর্যাদা পাওয়া এই অভয়ারণ্যের ৯০ শতাংশেরও বেশি এলাকা। তবে বনকর্মীরা বন্যার জেরে মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ৮টি গণ্ডার শাবককে উদ্ধার করেছেন। এদের মধ্যে ৩টি শাবকের বয়স মাত্র ১ মাস। উদ্ধার করা হয়েছে ২টি হরিণকেও।

২,১৩ লাখ হেক্টর কৃষিজমি ডুবে গেছে বন্যার জলে। ঢুয়ে গেছে একের পর এক রাস্তা, বাঁধ, সেতু ও অন্যান্য পরিকাঠামো। সব মিলিয়ে খোলা হয়েছে ৭০৩টি ত্রাণ শিবির ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, এগুলিতে প্রায় ২.৩লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর রাখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। কোনওরকমেই যাতে মহামারী না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। আগামী বছর থেকে বর্যা আসার অনেক আগে থেকেই বাঁধগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য জেলা আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।