নয়াদিল্লি: বিপাকে ইউপিএ আমলের অ্যাডিশনাল সলিসিটার জেনারেল ইন্দিরা জয়সিংহ। তাঁর এনজিও লইয়ার্স কালেকটিভে বিদেশি অর্থসাহায্য ছ’মাসের জন্য বন্ধ করেছে কেন্দ্র। একইসঙ্গে জানিয়েছে, এক মাসের মধ্যে ওই সংস্থাকে জানাতে হবে, ফরেন কন্ট্রিবিউশনস (রেগুলেশন) অ্যাক্টে বিদেশি টাকার নয়ছয়ের জন্য কেন তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে না।
লইয়ার্স কালেকটিভ অবশ্য তড়িঘড়ি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করেছে। তাদের অভিযোগ, বরখাস্ত হওয়া আইপিএস অফিসার সঞ্জীব ভট্ট, মুম্বই বিস্ফোরণের আসামী ইয়াকুব মেমন ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গ্রিনপিস কর্মী প্রিয়া পিল্লাইয়ের জন্য সরব হওয়ার কারণেই সরকার ‘প্রতিশোধ’ নিচ্ছে তাদের ওপর। ইন্দিরা ও তাঁর স্বামী আইজীবী আনন্দ গ্রোভার বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ সহ বিজেপি কর্তাদের বিরুদ্ধে নানা মামলায় সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন। ইন্দিরার এনজিও-র অভিযোগ, তাদের বিদেশি অর্থসাহায্য আসা বন্ধ করে বিরোধী মুখ এভাবেই স্তব্ধ করতে চাইছে সরকার। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতে যাবে বলেও জানিয়েছে তারা।
কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য স্পষ্ট জানিয়েছে, লইয়ার্স কালেক্টিভের বিরুদ্ধে ফরেন কন্ট্রিবিউশনস (রেগুলেশন) অ্যাক্ট বা এফসিআরএ লঙ্ঘনের একগুচ্ছ অভিযোগ রয়েছে। এএসজি থাকাকালীন নিজের এনজিও-র থেকে ২০০৯-এর জুলাই থেকে ২০১৪-র মে মাসের মধ্যে জয়সিংহ ৯৬,৬০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন। কেন্দ্রের প্রশ্ন, সরকারি পদে থাকা সত্ত্বেও এতদিন ধরে একটি বেসরকারি সংস্থার থেকে কী করে এত টাকা পারিশ্রমিক নিলেন তিনি। অথচ কেন তিনি সেই টাকা পেয়েছেন তার কোনও কারণ দর্শানো হয়নি। সামাজিক কাজের জন্য বিদেশ থেকে যে টাকা এসেছে তা যথেচ্ছ খরচ করে জয়সিংহ ও তাঁর স্বামী গ্রোভার ইচ্ছেমত বিদেশভ্রমণ করেছেন বলেও অভিযোগ করেছে কেন্দ্র। তাদের অভিযোগ, এফসিআরএ লঙ্ঘন করে যেমন বিদেশি ব্যাঙ্কে ওই এনজিও বিদেশ থেকে আসা অর্থ জমা করেছে, তেমনই ওই টাকা নয়ছয় করে ধর্না, মিছিলের আয়োজন করেছে তারা।
তথাকথিত সমাজকর্মী ও জয়সিংহের মক্কেল তিস্তা শেতলওয়াড়ের এনজিও-র বিরুদ্ধেও একইভাবে সক্রিয় হয়েছে কেন্দ্র। সবরং ট্রাস্টের লাইসেন্স সাসপেন্ড করা হয়েছে, যে কোনওদিন তা বাতিল হতে পারে। তাঁর অন্য একটি এনজিও সিটিজেনস ফর জাস্টিস অ্যান্ড পিসেও বিদেশি অর্থের আমদানি মারাত্মক কড়াকড়ির মুখে পড়েছে। সিবিআই তদন্তও চলছে তাঁর বিরুদ্ধে।