কেরলের পালাক্কড়ের মানুষ শেষন গতকাল রাতে পৌনে দশটা নাগাদ প্রয়াত হয়েছেন। গত কয়েক বছর ধরে নানা অসুখে ভুগছিলেন তিনি। তামিলনাড়ু ক্যাডারের ১৯৫৫-র ব্যাচের এই আইএএস অফিসার ১২ ডিসেম্বর, ১৯৯০ থেকে ১১ ডিসেম্বর, ১৯৯৬ পর্যন্ত মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। ক্যাবিনেট সেক্রেটারিও হন। ১৯৯৬-এ গণ পরিষেবার জন্য পান ম্যাগসেসে পুরস্কার। আদর্শ আচরণবিধি কঠোরভাবে চালু করার পুরোধা শেষন ভোটের লড়াইয়ে অবতীর্ণ রাজনীতিকদের মধ্যে ভয়ের সঞ্চার করেছিলেন। যাঁরাই নিয়ম ভাঙার চেষ্টা করতেন, দল নির্বিশেষে কড়া ব্যবস্থা নিতেন তাঁদের বিরুদ্ধে। বুথ দখল ও ভোটারদের ঘুষ দিয়ে কেনার বিরুদ্ধে তাঁর আপসহীন লড়াই সে সময় অনেক রাজনৈতিক দলের চক্ষুশূল হয়েছিল। রাজ্যপাল ছেলের জন্য ভোটপ্রচার করায় মধ্য প্রদেশের এক কেন্দ্রে তিনি ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেন। শেষমেষ সেই রাজ্যপালকে ইস্তফা দিতে হয়। আবার উত্তর প্রদেশে ভোটপ্রচার শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও প্রচার চালাতে ব্যস্ত এক মন্ত্রীকে তড়িঘড়ি মঞ্চ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেন তিনি।
১৯৯৭-এ রাষ্ট্রপতি পদের জন্য ভোটে লড়েন শেষন কিন্তু হেরে যান কে আর নারায়ণনের কাছে। ১৯৯৯-এ আবার কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে দাঁড়ান লালকৃষ্ণ আডবাণীর বিরুদ্ধে, গাঁধীনগর থেকে। হেরে যান তখনও।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর প্রয়াণে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। বলেছেন, শেষন এক অসামান্য অফিসার ছিলেন, যিনি অনন্ত পরিশ্রম ও নিষ্ঠা দিয়ে দেশের সেবা করেছেন। আমাদের গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছেন তিনি, মানুষের অংশগ্রহণ বেড়েছে।
শোকপ্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বলেছেন, গণতন্ত্রের মশালবাহক হিসেবে তিনি চিরকাল স্মরণীয় থাকবেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও শোকপ্রকাশ করেছেন।
তাঁর উত্তর প্রজন্মের কাছে শেষন আদর্শ ছিলেন, বলেছেন, প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এসওয়াই কুরেশি।
কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। জানিয়েছেন, পালাক্কড়ের ভিক্টোরিয়া কলেজে শেষন তাঁর বাবার সহপাঠী ছিলেন। গণতন্ত্রের স্তম্ভ ছিলেন তিনি, তিনি যা করেছেন তাঁর আগের কোনও নির্বাচন কমিশনার তা করতে পারেননি।
আইএএস অ্যাসোসিয়েশনও শোকপ্রকাশ করেছে। জানিয়েছে, শেষন ছিলেন সকলের রোল মডেল।