নয়াদিল্লি: বেশ কিছুদিন ধরেই বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ চলছিল এবং তা জনসমক্ষে চলেও আসে। শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহী বিজেপি নেতা যশবন্ত সিনহা দল ছাড়লেন। শনিবার বিজেপি ছাড়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করলেন এই প্রবীণ নেতা। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যদিও অন্য কোনও দলে যোগ দিচ্ছেন না। বিজেপি ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে 'রাজনৈতিক সন্ন্যাস' নেওয়ার সিদ্ধান্তও ঘোষণা করেছেন তিনি।
আজ পটনায় এক সভায় তিনি বলেন, সব ধরনের দলীয় রাজনীতি থেকে ছুটি নিচ্ছি। বিজেপির সঙ্গেও যাবতীয় সম্পর্ক চুকিয়ে দিচ্ছি। তবে একইসঙ্গে দেশে 'গণতন্ত্র রক্ষা'য় জোরদার আন্দোলনে নামবেন বলেও ঘোষণা করেছেন তিনি।

এদিকে বিজেপি যশবন্ত সিনহার দল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণায় মোটেই অবাক হয়নি বলে জানাল। দলের মুখপাত্র তথা জাতীয় মিডিয়া সেলের প্রধান অনিল বালুনি বলেন, ওনার নানা মন্তব্য, লেখাপত্র থেকেই বোঝা যাচ্ছিল, উনি মানসিক ভাবে আর বিজেপির সঙ্গে নেই। দল ওনাকে অনেক সম্মান, গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়েছে। কিন্তু ওনার আচরণ ঠিক ছিল না। ওনার কথাবার্তায় কংগ্রেসের সুর শোনা যেত, মনে  হত, বিরোধী দলের হয়ে আসরে নেমে কেউ কথা বলছেন।

বিজেপি ত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়েও মোদী প্রশাসনকে আক্রমণ করেন যশবন্ত। বাজেট অধিবেশন মোদী সরকারই চলতে দেয়নি বলে অভিযোগ করেন। বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, কেন্দ্রের সরকারই সংসদ অধিবেশন স্বাভাবিক ভাবে হতে দেয়নি। বাজেট অধিবেশন ঠিকঠাক চলল কিনা, তা নিয়ে কোনও মাথাব্যাথাই ছিল না তাদের। বিরোধীদের দাবিগুলি শুনতে তাদের একবারও বৈঠকে ডাকেননি প্রধানমন্ত্রী।

বিজেপিতে নরেন্দ্র মোদী জমানা শুরু হওয়ার সময় থেকেই বিজেপির পুরানো জমানার নেতাদের সঙ্গে নেতৃত্বের দূরত্ব তৈরি হয়। লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলিমনোহর যোশী, যশবন্ত সিংহ, অরুণ শৌরিদের মতো যশবন্ত সিনহারও মনে হয়, দলে তাঁরা কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন। গত কয়েক মাসে মোদী সরকারের বেশ কিছু নীতির ব্যাপারে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেন যশবন্ত।
গত ২৮ মার্চ তিনি শত্রুঘ্ন সিনহাকে সঙ্গে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ২০১৯ এর সাধারণ নির্বাচন ও কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে সব বিরোধী দলকে একজোট করতে তাঁর উদ্যোগের প্রশংসাও করেন।