নয়াদিল্লি: একসময় জীবিকা বলতে ছিল চুড়ি বিক্রি! মায়ের সঙ্গে মহারাষ্ট্রের মহাগাঁও গ্রামের অলিগলিতে চুড়ি বিক্রি করেই সংসার চালাত ১০ বছরের রমেশ ঘোলাপ। কিন্তু কে জানত, ২০১৯ সালে সেই রমেশই হয়ে উঠবেন একজন আইএএস অফিসার।

আইএএস হওয়ার এই পথটা রমেশের জন্য সহজ ছিল না। তাঁর ছোটবেলা কেটেছে মা-বাবা-ভাইয়ের সঙ্গে মহারাষ্ট্রের মহাগাঁও গ্রামে। বাবার একটি ছোট্ট সাইকেল সারাবার দোকান ছিল। কিন্তু রমেশের বাবা ছিলেন নেশায় আসক্ত। মায়ের সঙ্গে চুড়ি বিক্রি করে যা উপার্জন হতো রমেশের, তা নেশার পিছনেই খরচ করে ফেলতেন বাবা। অল্প বয়সেই অসুস্থ হয়ে একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। রামু তখন দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। সেই সময় তাঁর মৃত্যু হয়।

এরপর রমেশ পড়াশোনা চালাতে এক আত্মীয়ের বাড়ি বর্শি চলে আসেন। মা-ভাইকে সাহায্য করার সকালে বিভিন্ন কাজ করে অর্থ উপার্জন করতেন তিনি। রাতে নিজের পড়াশোনা চালাতেন। ম্যাট্রিক পরীক্ষায় ৮৮.৫০ নম্বর নিয়ে পাশ করেন তিনি। এরপর মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও তিনি আর্টস বিভাগে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে পাশ করেন৷ ২০০৯ সালে শিক্ষকতা শুরু করেন রমেশ। সেই সঙ্গে চালিয়ে যান আইএএস হওয়ার পড়াশোনাও। প্রথমবার পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি রমেশ। কিন্তু হাল ছেড়ে দেননি। দ্বিতীয়বার পরীক্ষায় সফলতা পান রমেশ।

২০১৯ সালে আইএএস অফিসার হিসাবে কাজে যোগ দেন রমেশ। বর্তমানে তিনি ঝাড়খণ্ডের বিদ্যুৎ মন্ত্রালয়ের সংযুক্ত সচিব রমেশ ঘোলাপ।

রমেশ ঘোলাপ বলেছেন, তিনি আট বছর আইএএস অফিসার হিসেবে কাজ করছেন। কিন্তু তাঁর মা এখনও চুড়ি বিক্রি করেন। ঘোলাপ জানিয়েছেন, তাঁর মা বলেন যে, তোমার পড়াশোনার অর্থ এই চুডি বিক্রি করেই রোজগার করেছি। সেজন্যই তুমি ভালো কালেক্টর হতে পেরেছ। যতদিন শরীর দেবে ততদিন আমি চুড়ি বিক্রি করব।