নয়াদিল্লি: আনুষ্ঠানিক ভাবে 'পদ্মাবতী' রিলিজের বিরোধিতায় সমর্থনের ইঙ্গিত দিল বিজেপি। কার্নি সেনা ও রাজপুত সংগঠনগুলির সুরেই 'পদ্মাবতী'র বিরোধিতায় মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় জাতীয় সড়ক মন্ত্রী নিতিন গডকরী। দীপিকা পাড়ুকোন, রণবীর সিংহ, শাহিদ কপূর অভিনীত ছবিটির মুক্তির ব্যাপারে এ পর্যন্ত চুপ ছিল বিজেপি। তবে শুক্রবার প্রথম দলের কোনও শীর্ষ নেতা হিসাবে গডকরী নিজের মানমর্যাদা রক্ষায় 'জওহর ব্রত' পালন করেছিলেন পদ্মাবতী, রাজপুত সমাজের এহেন বিশ্বাসকে সমর্থন করলেন। ছবিটিতে রানি পদ্মাবতীর চরিত্রের অপমানের অভিযোগ অনুমোদন করে সৃষ্টিশীলতার নামে ইতিহাসের 'বিকৃতি'র নিন্দা করে চলচ্চিত্র পরিচালকদের এমন ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়ের ভাবাবেগ মাথায় রাখা উচিত বলে অভিমত জানান তিনি। বেছে বেছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হিন্দু দেবদেবী, চরিত্রগুলিকেই কাটাছেঁড়া করা হচ্ছে, এই অভিযোগে সায় দেন তিনি।
এক টিভি সাক্ষাত্কারে গডকরী বলেন, লোকে আহত, অসম্মানিত বোধ করতেই পারে। ছবির পরিচালকদের কখনই ইতিহাসের তথ্য বিকৃত করা উচিত নয়। পদ্মাবতী আমাদের ইতিহাসের অংশ, পরিচালকদের এ ক্ষেত্রে সংবেদনশীল থাকা দরকার। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়ে দেন তিনি।
রাজস্থানের একাধিক বিজেপি বিধায়ক পদ্মাবতীকে এই ছবিতে খারাপ ভাবে দেখানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন, আলাউদ্দিন খিলজির সঙ্গে তাঁর কোনওরকম সম্পর্ক দেখানো মেনে নেওয়া চলে না বলে জানিয়েছেন। রাজ্যে ভোটের মুখে গুজরাত বিজেপি পদ্মাবতীর মুক্তি স্থগিতের দাবি করেছে। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র আই কে জাডেজার মত, বাস্তবে কোনওদিন পদ্মাবতীর সঙ্গে খিলজির দেখা হয়নি। গুজরাতে ভোটের আগে যাতে অহেতুক উত্তেজনা তৈরি না হয়, সেজন্য ছবিটি মুক্তি পাওয়ার আগে রাজ্যের ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়কে দেখানোর ব্যবস্থা করতেও নির্বাচন কমিশনকে আর্জি জানান তিনি। রাজপুত সম্প্রদায়ের ভোট আছে গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ সহ কয়েকটি রাজ্যে, সেজন্যই নাকি গুজরাত বিজেপির এই অবস্থান।
ঘটনাচক্রে এমন সময় গডকরী পদ্মাবতী নিয়ে আপত্তি জানালেন যখন গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর লেখা 'ভাগওয়া হ্যায় পদ্মিনী কী জওহর কি জোয়ালা' কবিতাটি সামনে এনে দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে, পদ্মাবতী তাদের চোখে কতটা মহান। বাজপেয়ী লোকসভায় কবিতাটি পড়ে শুনিয়েছিলেন, যাতে খিলজির দূর্গ আক্রমণের পর চিতোরগড়ের রানি-র 'চরম আত্মবলিদানের' কথা বলে তাঁর গুণকীর্তন করা হয়েছে।