মন্দসউর: ছেলে হয়নি বলে রাগে, হতাশায় বাবা-মা মেয়ের নাম রাখেন ‘আনচাহি’। যার বাংলা অর্থ অবাঞ্চিত। মধ্যপ্রদেশে অন্তত দু’টি মেয়ের এই নাম দেখা গিয়েছে। তার মধ্যে একজন প্রথম বর্ষের বিএসসি পড়ুয়া এবং অপররজন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। দুই পরিবারেরই বিলাউদ গ্রামে বাস। দু’টি মেয়েরই জন্ম শংসাপত্র, স্কুলের নথিতে এবং আধার কার্ডে নাম রয়েছে আনচাহি।


কলেজপড়ুয়া মেয়েটির মা কান্তি বাই বলেছেন, ‘আমার স্বামী পঙ্গু হয়ে গিয়েছেন। আমরা ছেলে চাইছিলাম। কিন্তু আমি পরপর পাঁচটি মেয়ের জন্ম দিই। পঞ্চম মেয়েটির নাম দিই আনচাহি। যাতে পরেরবার ছেলেই হয়, সেটার জন্যই এই নাম দিই। কিন্তু পরেরবারও মেয়ে হয়। এরপর আমরা জন্মনিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নিই।’

এই কলেজছাত্রী বলেছেন, ‘যখন ছোট ছিলাম, নাম নিয়ে কিছু ভাবতাম না। পরে যখন লোকজন আমার নাম নিয়ে ব্যঙ্গ করা শুরু করল, তখন আমি বুঝতে পারলাম এটা কতটা খারাপ। আমার এখন লজ্জা লাগে। দশম শ্রেণির পরীক্ষার ফর্ম ফিল আপ করার সময় আমি নাম বদল করতে চাইছিলাম, কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেয়নি। এখন আবার আমি নাম বদলানোর চেষ্টা করছি। তবে ছেলে না হওয়ায় আমার বাবা-মার এখন আর আফশোস নেই। তাঁরা আমাদের মধ্যেই ছেলেকে দেখতে চান।’

কান্তি বাইদের বাড়ির কাছেই থাকে অন্য আনচাহি। সে তার বাবা-মার তৃতীয় কন্যাসন্তান। তার জন্ম হওয়ার পর আর যাতে মেয়ে না হয়, তার জন্যই এই নাম রাখা হয়। তার বাবা-মা অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।

কন্যাসন্তানের বিষয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদল করার লক্ষ্যে ২০০৭ সালে ‘লাডলি লক্ষ্মী যোজনা’ চালু করেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। কিন্তু তাতে যে কোনও লাভ হয়নি, সেটা এই নামেই প্রমাণিত। একইভাবে মহারাষ্ট্রেও ছেলের বদলে মেয়ে হওয়ায় ‘নাখুশি’ নাম দেখা গিয়েছে। সেখানে অবশ্য রাজ্য সরকার উদ্যোগ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মেয়েদের নাম বদলে দিয়েছে।