নয়াদিল্লি:  খুব শীঘ্রই গুরুত্বপূর্ণ কৃতিত্ব অর্জন করতে চলেছে ভারত। এ দেশের পড়ুয়াদের সংখ্যা সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। খুব শীঘ্রই সংখ্যার বিচারে ছাত্রদের ধরে ফেলবে মেয়েরা। ছাত্রীদের সংখ্যা হবে দেশের মোট পড়ুয়ার অর্ধেক। ২০১৫-১৬ বর্ষের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট ৩০ কোটি পড়ুয়ার মধ্যে ৪৮ শতাংশই ছিল মেয়েরা।
বিগত কয়েক বছরে স্কুল, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়-বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেয়েদের ভর্তি হওয়ার সংখ্যা প্রচুর পরিমাণে বেড়েছে।
শুরুতে ১৯৫০-৫১ বর্ষে দেশের মোট পড়ুয়াদের মাত্র ২৫ শতাংশ ছিল মেয়েরা। তারপর থেকে ছাত্রীর সংখ্যা শম্বুক গতিতে বেড়েছে। চল্লিশ বছর পর ১৯৯০-৯১ –এ তা বেড়ে পৌঁছয় ৩৯ শতাংশে। এর পরের দশকে এই পরিমাণ ৪২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে। ২০০০-০১ থেকে বাড়তে বাড়তে এই হার প্রায় অর্ধেকে পৌঁছেছে।
ভর্তি হওয়ার পরই ছাত্রীরা সম্ভবত তাদের পড়াশোনার প্রতি অনেক বেশি সচেতন হয়ে ওঠে। তাই ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বেশি ডিগ্রি পায়।
একদিক থেকে দেখলে ছাত্রীদের এই সংখ্যাবৃদ্ধি ভারতকে বিশ্বের প্রথমসারির দেশগুলির পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলিতে উচ্চশিক্ষায় মোট পড়ুয়াদের মধ্যে ৫৪ শতাংশই ছাত্রী। আমেরিকায় এই হার ৫৫ শতাংশ এবং চিনে ৫৪ শতাংশ। এর সঙ্গে সঙ্গে ওই দেশগুলিতে সমাজে মেয়েদের মর্যাদাও বৃদ্ধি পেয়েছে।উপযুক্ত শিক্ষার সুযোগের হাত ধরেই এসেছে চাকরি, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ সংস্থাগুলিতে মেয়েদের আরও বেশি ভূমিকা। এতে সমাজে মহিলাদের মর্যাদা আরও বেশি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ভারতে কিন্তু এক্ষেত্রে এখনও সামঞ্জস্য আসেনি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ছাত্রীর সংখ্যা বাড়লেও সেই অনুপাতে সামাজিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন স্তরে মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব সেভাবে বাড়েনি। চাকরির ক্ষেত্রে মেয়েদের হার ২৭ শতাংশ। সংসদে মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব মাত্র ১১ শতাংশ এবং রাজ্য বিধানসভাগুলিতে ৮.৮ শতাংশ। দেশের তালিকাভূক্ত ৫০০ টি বড় কোম্পানিতে মহিলা সিইও-র সংখ্যা মাত্র ১৭। এই পরিসংখ্যান প্রতিভার অপচয়ের বিষয়টি তুলে ধরে।
সর্বশিক্ষা অভিযান ও মিড-মে মিল কর্মসূচীর জন্য ১৯৯০ এবং ২০০০-এর দশকের প্রথমে স্কুলে ছাত্রীদের সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। উচ্চ শিক্ষাক্ষেত্রেও মেয়েদের সংখ্যা বেড়েছে। ২০০০-০১ এর ৩৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০১৫-১৬ তে হয়েছে ৪৬ শতাংশ।