নয়াদিল্লি:তাঁর ছেলেকে যখন উপর্যুপরি ছুরি মারা হচ্ছিল, তখন লোকে পাশে দাঁড়িয়ে মোবাইলে ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন। মুমূর্ষু ছেলে সাহায্যের জন্য বারবার চিৎকার করলেও একজনও এগিয়ে আসেনি। অভিযোগ করলেন  ভিন্ন ধর্মে প্রেম করার 'অপরাধে' পরশু রাতে দিল্লির রাস্তায় নৃশংসভাবে খুন হয়ে যাওয়া অঙ্কিত সাকসেনার মা।


২৩ বছরের অঙ্কিত পেশায় ফটোগ্রাফার ছিলেন। অভিযুক্তর মেয়ের সম্পর্ক তাঁর গড়ে ওঠে ৩ বছর আগে, তখন তাঁরা পরস্পরের প্রতিবেশী ছিলেন। দ্বিতীয় বর্ষের কলেজ ছাত্রী ওই তরুণী পুলিশে অভিযোগ করেছেন, তিনি যখন অঙ্কিতের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন, তখন শোনেন, তাঁকে ধরে গলা কেটে ফেলা হয়েছে। তাঁর বাবা, কাকার এই ঘটনায় হাত রয়েছে, তাঁর আশঙ্কা, পরিবারের লোক তাঁকেও খুন করতে পারে। তাঁকে হোমে পাঠিয়েছে পুলিশ, নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টায় অঙ্কিতের মা কমলেশের পাঁজরের হাড় ভেঙে গিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, পাড়ার লোক এসে তাঁকে খবর দেয়, তাঁর ছেলেকে রাস্তায় ফেলে কয়েকজন মারধর করছে। তাঁকে বাঁচাতে ছুটে যান তিনি। তখন মেয়ের বাবা, মা, কাকারা তাঁকেও মারতে শুরু করে। সেই অবস্থাতেও অঙ্কিত উঠে পড়ে মাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তখন দুজন তাঁর হাত চেপে ধরে আর তাঁর প্রেমিকার বাবা বুকে পরপর ছুরি মেরে গলা কেটে দেয়। তাঁকে ফুটপাথের ধারে ফেলে দিয়ে চম্পট দেয় তারা।
কমলেশ ছেলের গলায় নিজের ওড়না জড়িয়ে টোটো রিকশা করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁর অভিযোগ, লোকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিল, কেউ সাহায্যে আসেনি, পুলিশেও ফোন করেনি কেউ। হাসপাতালে নিয়ে গেলে অঙ্কিতকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
অঙ্কিতের পরিবার স্থানীয় খ্যালা পুলিশ স্টেশনের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে তারা। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মেয়েটির বাবা, মা ও কাকাকে গ্রেফতার করে তিহার জেলে পাঠানো হয়েছে। ১৮ বছরের কম বয়সি এক ভাইকে আটক করে পাঠানো হয়েছে হোমে। পুলিশ আদালতে অনুরোধ করেছে, তাকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে দেখতে।