যদিও হাসপাতাল দাবি করেছে, অক্সিজেন সরবরাহ কম থাকার কোনও ঘটনা ঘটেনি। যে সংস্থা হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহের দায়িত্বে ছিল, সেই এইচআর পুষ্পা গ্যাস এজেন্সিরও দাবি, তারা অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করেনি, এভাবে আচমকা সরবরাহ বন্ধ করা যায় না, এর ফল কী হতে পারে তারা জানে। তবে ওই সংস্থায় সকাল থেকে তল্লাশি চলছে। সংস্থার মালিক মণীশ ভাণ্ডারি গা ঢাকা দিয়েছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থনাথ সিংহ এবং প্রযুক্তি ও চিকিৎসা বিদ্যা সংক্রান্ত মন্ত্রী আশুতোষ ট্যান্ডন সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সিদ্ধার্থনাথের দাবি, ৭ তারিখ থেকেই ওই হাসপাতালে নানা রোগে ৬০টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে, সব মৃত্যুর কারণ অক্সিজেনের অভাব নয়। তাঁর আরও দাবি, হাসপাতালে যে অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাব রয়েছে, সে ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীকে আদৌ জানানোই হয়নি, জানতেন না চিকিৎসা বিদ্যা সংক্রান্ত মন্ত্রীও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নাড্ডাও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী অনুপ্রিয়া প্যাটেলকে নির্দেশ দিয়েছেন গোরক্ষপুরে যেতে। উপ মুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য বলেছেন, এই ঘটনায় যেই অপরাধী হোক, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গোটা ঘটনার বিশদ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, শিশু মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে তারা তদন্ত করছে।
তবে খোদ বিজেপি সাংসদ সাক্ষী মহারাজ এই ঘটনায় কাঠগড়ায় তুলেছেন যোগী সরকারকে। এভাবে শিশুমৃত্যু নরসংহার বলে বর্ণনা করেছেন তিনি। রাজ্য সরকার যাই বলুক, তাঁর অভিযোগ, অক্সিজেন কম থাকার জন্যই মারা পড়েছে এতগুলি শিশু। নোবেলজয়ী কৈলাস সত্যার্থীও বলেছেন, এই ঘটনা কোনও ট্র্যাজেডি নয়, এটা নরসংহার।
শিশুমৃত্যুর ঘটনায় বিরোধীরা একযোগে তুলোধোনা করেছে রাজ্য সরকারকে। এসপির অভিযোগ, সরকার সত্যি প্রকাশ করছে না, উল্টে বিরোধীদের বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলছে।
কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল হাসপাতালে গিয়েছে, দলে রয়েছেন গুলাম নবি আজাদ ও রাজ বব্বর। স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও প্রযুক্তি ও চিকিৎসা বিদ্যা সংক্রান্ত মন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়েছে তারা। বিএসপি মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথের পদত্যাগ দাবি করেছে।
ক্ষমতায় আসার পর গত এপ্রিলে আদিত্যনাথ সরকার ঘোষণা করে, তারা রাজ্যে ৬টি এইমস ও ২৫টি নতুন মেডিক্যাল কলেজ গড়ে তুলবে। উত্তরপ্রদেশে এইমস গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি বিজেপির নির্বাচনী ম্যানিফেস্টোর অন্যতম অংশ ছিল।