নয়াদিল্লি: সংসদের বাদল অধিবেশনের আগে ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে চিন এবং কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার বিরোধীদের ওয়াকিবহাল করল কেন্দ্র।
এদিনের সর্বদল বৈঠকে হাজির ছিল কংগ্রেস, বাম, সমাজবাদী পার্টি সহ একাধিক বিরোধী দল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহর বাসভবনে ডাকা ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি। এছাড়া, উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল সহ কেন্দ্রের শীর্ষ আধিকারিকরা।
সূত্রের খবর, বৈঠকে কাশ্মীর পরিস্থিতি ও চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতের বাস্তবচিত্র তুলে ধরেন মোদী সরকারের তিন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। দুটি ইস্যুতে সরকারের অবস্থান কী, তা বিরোধীদের সামনে তুলে ধরা হয়। আগামী সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে ১৭ জুলাই সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে এই দুটি ইস্যুতে বিরোধীদের বিরোধীদের সঙ্গে সহমত গড়ে তোলাই এই বৈঠকের উদ্দেশ্য বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন গুলাম নবি আজাদ, মল্লিকার্জুন খাড়গে, সীতারাম ইয়েচুরি, রামবিলাস পাসোয়ান, তারিক আনোয়ার, মুলায়ম সিংহ যাদব, কে সি ত্যাগী ও ডেরেক ও’ব্রায়েন। উল্লেখ্য, চিনের সঙ্গে সীমান্তে ডোকালাম সমস্যা জটিল আকার ধারণ করেছে। ভারত-চিন-ভুটান সীমান্তের সংযোগস্থল সিকিম এলাকার ডোকা লায় স্থিতাবস্থা চিন বদল করতে চাইছে বলে মনে করছে নয়াদিল্লি। ওই এলাকায় চিনের সড়ক তৈরির কাজ আটকে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। এই ঘটনা ঘিরে ডোকা লায় গত তিন সপ্তাহ ধরে অচলাবস্থা চলছে।
এর পাশাপাশি, গত সোমবার অমরনাথ থেকে ফেরার পথে অনন্তনাগে তীর্থযাত্রীদের ওপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে সাতজনের মৃত্যু হয়। গত বছরের ৮ জুলাই হিজবুল মুজাহিদিন কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকে রাজ্যের চার জেলা পুলওয়ামা, শোপিয়ান, কুলগাম ও অনন্তনাগে অশান্তি চলছে। বুরহানের মৃত্যুর পর দীর্ঘ পাঁচ মাসের অশান্তিতে উপত্যকায় ৭৬ জনের পাশাপাশি দুই পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়। গত ৯ এপ্রিল শ্রীনগর লোকসভা আসনের উপনির্বাচন ঘিরে অশান্তি ফের শুরু হয়।
সরকার যেভাবে চিন ও কাশ্মীর পরিস্থিতি সরকার যেভাবে সামলানোর নীতি নিয়েছে তার তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলি। কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গাঁধী চিনের সঙ্গে সংঘাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘নীরবতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। রাহুল ভারতে নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন।
রাহুল গতকাল কাশ্মীর নিয়েও সরকারের নীতির সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, মোদী সরকারের নীতি কাশ্মীরে জঙ্গিদের জমি তৈরি করে দিচ্ছে। রাহুলের অভিযোগ, রাজ্যের পিডিপি-বিজেপি জোটের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর তাত্ক্ষণিক রাজনৈতিক ফায়দা লাভের কৌশল দেশের পক্ষে ক্ষতিকারক হচ্ছে এবং নীরিহ মানুষের প্রাণ যাচ্ছে।