নয়াদিল্লি: পেট্রোল ও ডিজেলের ক্রমবর্ধমান মূল্যের ফলে দেশজুড়ে মধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস অবস্থা। বিরোধীদের আক্রমণে চাপে কেন্দ্রীয় সরকার। এই পরিস্থিতিতে মোদী সরকারের সাফাই, মূল্যবৃদ্ধির এই প্রবণতাকে রুখতে দীর্ঘমেয়াদী সমাধান-সূত্র বের করা হচ্ছে।


গতবছরের জুন মাসে ১৫ বছর ধরে চলে আসা প্রত্যেক ১৫-দিন অন্তর তেলের মূল্য নির্ধারণ করার নিয়মকে পাল্টে দৈনিক পরিবর্তনের নিয়ম চালু করে কেন্দ্র। সেই থেকে প্রতিদিনই পেট্রোল ও ডিজেলের দাম পরিবর্তন হতো।


কিন্তু, কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে আচমকা সেই দৈনিক বৃদ্ধিকে সাময়িক স্থগিত রাখে মোদী সরকার। ফলত, ১৯-দিন তেলের মূল্যবৃদ্ধি হয়নি। ভোটপর্ব শেষ হওয়া ইস্তক গত ১১ দিনে ১০ বার বেড়েছে জ্বালানির দাম। এই সময়ে পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য যথাক্রমে লিটারে ২.৫৪ টাকা ও ২.৪১ টাকা বেড়েছে।


এই বিপুল মূল্যবৃদ্ধির ফলে, কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর বিস্তর চাপ বেড়েছে। বিভিন্ন মহল থেকে একদিকে যেমন শুল্ক কমানোর দাবি উঠেছে, তেমনই এই দুই জ্বালানিকে জিএসটি-র আওতায় আনার স্বপক্ষেও জোরালো সওয়াল করেছেন অনেকে।


এমতাবস্থায় বুধবার, জরুরি বৈঠকে বসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মোদী-ক্যাবিনেটের শীর্ষ নেতারা। বৈঠক শেষে আইন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানান, দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের মাধ্যমে গ্রাহকদের সুরাহা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্র।


তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের এই নিরন্তর মূল্যবৃদ্ধি বিতর্ক ও উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার এই গোটা প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। তেলের মূল্যবৃদ্ধির এই অনিশ্চিয়তা নিয়ে সরকার যারপরনাই উদ্বিগ্ন। তিনি জানান, ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম ঘিরে অনিশ্চয়তা রয়েছে। যে কারণে, এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।


প্রসাদের দাবি, স্বল্পমেয়াদী সংস্থান না করে দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের কথা বিবেচনা করছে কেন্দ্র, যাতে এই প্রতিনিয়ত দামের উতর-চড়াই ও তার ফলে উদ্ভুত সমস্যাও এড়ানো সম্ভব হয়।


যদিও, শুল্কে ছাড় দেওয়ার ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে কি না, সেই প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান। বলেন, জ্বালানি থেকে প্রাপ্ত কর উন্নয়নমূলক প্রকল্পে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন—সড়ক নির্মাণ, গ্রামের বিদ্যুতায়ণ, হাসপাতাল ও শিক্ষাকেন্দ্রের গঠন।