নয়াদিল্লি: গুজরাতে একের পর এক দলীয় বিধায়ক দলছাড়ার জন্য বিজেপিকেই অভিযুক্ত করল কংগ্রেস। যা নিয়ে উত্তপ্ত হল সংসদের উভয় কক্ষই।


সোমবার সংসদে গুজরাত ইস্যুতে তুমুল হই-হট্টগোল করে কংগ্রেস। তাদের দাবি, এর জন্য প্রত্যেক দলত্যাগী বিধায়ককে ১৫ কোটি টাকার 'টোপ' দিয়েছে গেরুয়া শিবির। পাশাপাশি, এমন চাপসৃষ্টি করা হয়, যে কংগ্রেস বিধায়করা দল ছাড়তে কার্যত বাধ্য হয়েছেন।


এদিন সভার কাজ শুরু হতেই লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে গুজরাতের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ইস্যু উত্থাপন করেন। তাঁর অভিযোগ, ৮ অগাস্টের রাজ্যসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি একের পর এক কংগ্রেস বিধায়ককে ‘অপহরণ’ করছে। তিনি যোগ করেন, এর ফলে বাধ্য হয়ে বিধায়কদের কর্নাটকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।


প্রসঙ্গত, আসন্ন রাজ্যসভা নির্বাচনে বিজেপি তিন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। এই তালিকায় রয়েছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এবং কংগ্রস দলত্যাগী বিধায়ক বলবন্ত সিংহ রাজপুত। অন্যদিকে, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা আহমেদ পটেল পুনর্নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রার্থী হয়েছেন।


খাড়গের অভিযোগ, কংগ্রেস বিধায়কদের ওপর চাপসৃষ্টি করা হয়েছে। তাঁর কথার রেশ ধরে কং সাংসদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া অভিযোগ করেন, গুজরাতের প্রত্যেক দলত্যাগী বিধায়ককে ১৫ কোটি টাকা করে দিয়েছে বিজেপি। পরিবর্তে, রাজ্যসভায় তাদের প্রার্থীকে সমর্থন করতে হবে।


এই অভিযোগের তীব্র বিরোধিতা করা হয় বিজেপির তরফে। কক্ষের মধ্যে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে শুরু হয়ে যায় বাকবিতণ্ডা। এই ইস্যুতে সভায় আলোচনার দাবি তোলেন সিন্ধিয়া ও খাড়্গে। কিন্তু, স্পিকার সুমিত্রা মহাজন সেই দাবি খারিজ করে জানিয়ে দেন, রাজ্যের ইস্যু নিয়ে সংসদে আলোচনা হবে না।


নিম্ন কক্ষের মতো, গুজরাতে বিধায়ক ‘কেনাবেচা’ নিয়ে উত্তপ্ত ছিল রাজ্যসভাও। এখানে কংগ্রেস সংখ্যাগরিষ্ঠ। তারা ওয়েলে নেমে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন। সেখানে কংগ্রেস সাংসদ মধুসূদন মিস্ত্রিও দাবি করেন, দলত্যাগী কংগ্রেস বিধায়কদের ১০-১৫ কোটি টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।


যদিও, বিজেপির পাল্টা দাবি, কংগ্রেসই নিজেদের বিধায়কদের ‘অপহরণ’ করেছে। সংসদ-বিষয়ক মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি জানান, নিজেদের বিধায়কদের অপহরণ করে কর্নাটকের একটি রিসর্টে লুকিয়ে রেখেছে। তাও এমন একটা সময়ে যখন রাজ্যবাসী বন্যা মোকাবিলা করছে। ওদের (কংগ্রেস) লজ্জা হওয়া উচিত।


নিজেদের দাবিতে অনড় কংগ্রেস ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পাল্টা বিজেপি সাংসদরাও ওয়েলে নেমে আসেন। দুপক্ষের তুমুল হই-হট্টগোলের মধ্যে সভার অধিবেশনকে সাময়িক মুলতুবি করতে বাধ্য হন ডেপুটি চেয়ারম্যান পি জে ক্যুরিয়েন।