আমেদাবাদ: ভূমিপুত্র বনাম ভূমিপুত্র। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে হার্দিক-অল্পেশ-জিগনেশ।গুজরাতের তিন ঘরের ছেলে, তিন তরুণ নেতাকে, এবার তুরুপের তাস করতে চেয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি  রাহুল গাঁধী। রাহুলের পাশে এসে একে একে দাঁড়াবে হার্দিক, অল্পেশ, জিগনেশ।কিন্তু, রাহুলের এই ‘গুজরাত-লোকাল’ সেভাবে কাজে এল না।

বছর ২৩-এর হার্দিক পটেল পাতিদার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে ঝড় তুলেছিলেন! সভায় লাখো লাখো মানুষ ভিড়ও করতেন! হার্দিক আশা করেছিলেন বিজেপিকে ধাক্কা দেবেন। রাহুল গাঁধীর হাতও ধরেছিলেন তিনি। কিন্তু, ভোটের ফলে দেখা গেল, হার্দিক রাহুলের বিশেষ কোনও সুবিধা করতে পারেননি।

যে ৩৭টি আসনে পটেল সম্প্রদায় নির্ণায়ক, তার মধ্যে বিজেপি জিতেছে ২০টিতে। কংগ্রেস ১৭টিতে।

গুজরাতের ভোটে দাগ কাটতে না পেরে, হার্দিকের বক্তব্য, যে আসনগুলিতে খুব সামান্য ব্যবধানে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়েছে, সেখানে ইভিএমে গড়বড় করা হয়ে থাকতে পারে।

গুজরাতের মেহসানা, পাতিদার আন্দোলনের আঁতুড়ঘর। সেখানেও এগিয়ে বিজেপি। মেহসনা লোকসভা কেন্দ্রের অর্ন্তগত ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে বিজেপি জিতেছে ৫টিতে।

মেহসনা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতেছেন বিজেপির উপমুখ্যমন্ত্রী নিতিন পটেল।

হার্দিকের পাশাপাশি আরও দুই ভূমিপুত্র অল্পেশ-জিগনেশও সেভাবে দাগ কাটতে পারেননি।

ব্যক্তিগত ভাবে ভোটের ময়দানে জয় পেয়েছেন দলিত নেতা জিগনেশ মেভানি এবং ওবিসি নেতা অল্পেশ ঠাকোর।

রাধানপুর থেকে জিতেছেন অল্পেশ। তিনি কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে লড়েছিলেন।

জিগনেশ লড়েছিলেন নির্দল প্রার্থী হিসেবে। তাঁর জন্য নিজেদের শক্ত গড় বডগাম আসনটি ছেড়ে দিয়েছিল কংগ্রেস।

কিন্তু, নিজেরা জিতলেও, এই দুই ওবিসি ও দলিত নেতা মোদির পথের কাঁটা হয়ে উঠতে পারেননি।

গুজরাতে এমন কুড়িটি আসন রয়েছে যেখানে তফসিলি জাতির ভোটব্যাঙ্ক নির্ণায়ক ফ্যাক্টর

এই কুড়িটি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ১১টি আসন।

কংগ্রেস পেয়েছে ৮টি।

গুজরাতের ১৮২টি আসনের মধ্যে ৩২টি এমন আসন রয়েছে যেখানে প্রধান ফ্যাক্টর তফসিলি উপজাতি।

এই ৩২টি আসনের মধ্যে বিজেপি জিতেছে ১৫টিতে। কংগ্রেস ১৬টিতে।

গুজরাতে ৫০ টি আসনে নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে পারে ওবিসি ভোটব্যাঙ্ক।

এই পঞ্চাশটির মধ্যে বিজেপি জিতেছে ২৮টিতে, কংগ্রেস ২২টিতে।

অর্থাৎ‍ ফলেই স্পষ্ট, দলিত বা ওবিসি ভোট সেভাবে কংগ্রেসের ঝুলিতে টেনে আনতে পারেননি জিগনেশ, অল্পেশরা। কিন্তু, তারপরও অবশ্য গুজরাতে বিজেপিকে কড়া টক্কর দিতে সক্ষম হল কংগ্রেস।