গোয়ালিয়র:   মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রের রাস্তায় তাঁকে বসে থাকতে দেখেছেন অনেকেই। নিতান্ত এক ভিখারি তিনি। পথচলতি মানুষের দিকে তিনি হাত বাড়িয়ে দেন কিংবা ভিক্ষার পাত্র।কিছু জুটে যায়। এ ভাবেই যা সংগ্রহ হয় তাতে দিন গুজরান করেন তিনি। অথচ ওই ব্যক্তি দাবি করেছেন, তিনি আইআইটি কানপুরের একজন প্রাক্তনী। নাম সুরেন্দ্র বশিষ্ঠ। বাবার নাম ছেদালাল বশিষ্ঠ। সম্প্রতি তাঁকে উদ্ধার করেছে এক সেবা প্রতিষ্ঠান।

আশ্রম স্বর্গ সদন নামক সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত বিকাশ গোস্বামী জানান, আমরা ওঁকে অত্যন্ত দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় উদ্ধার করি। শীর্ণ দেহে, শতচ্ছিন্ন পোশাকে উনি বসে ছিলেন বাস স্ট্যান্ডের কাছে। আমরা ওঁর সঙ্গে কথা বলতে গেলে উনি চমৎকার ইংরাজিতে কথা বলতে থাকেন।আমরা পরম যত্নে ওঁকে আমাদের আশ্রমে এনে রেখেছি। ওঁর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে।

সুরেন্দ্র বিকাশকে জানিয়েছেন যে, তিনি ১৯৬৯ সালে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন আইআইটি কানপুর থেকে। এরপর ১৯৭২ সালে লখনউয়ের ডিএবি কলেজ থেকে এলএলএম ডিগ্রি পান।তাঁর বাবা জেসি মিলের সাপ্লায়ার ছিলেন। ১৯৯০ সাল নাগাদ সেই মিল বন্ধ হয়ে যায়। আপাতত কথা বলে এতটাই জানতে পেরেছেন আশ্রমের মানুষ। তবে আশ্রমের সকলে তাঁকে পেয়ে খুশি হয়েছে। তাঁরা এই আইআইটি প্রাক্তনীকে সাদরে গ্রহণ করেছে। আর পথে বসে ভিক্ষা করার দুর্দশা থেকে এমন একটা নিরাপদ আশ্রয় পেয়ে অনেকটাই ভাল আছেন সুরেন্দ্র।

কয়েকদিন আগেই একই সংগঠন মণীশ মিশ্র নামে এক প্রাক্তন পুলিশ কর্মীকে উদ্ধার করেছিলেন। তাঁকেও গোয়ালিয়রের রাস্তায় নিঃস্ব অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। সিনেমার চিত্রনাট্যের মতোই তাঁকে ফুটপাতে ভিক্ষে চাইতে দেখতে দেখতে পেয়েছিলেন তাঁরই সহকর্মীরা। ১৫ বছর আগে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন ওই পুলিশ কর্মী। তাঁকে মানসিকভাবে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল।

বিকাশ জানিয়েছেন, মণীশ এখন দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন। এখন অনেকটাই ভালো আছেন। একটা সময় রাজ্য পুলিশের শার্প শ্যুটার ছিলেন মণীশ। মানসিক ভারসাম্য হারানোয় তাঁর জীবন অন্যদিকে মোড় নেয় এবং তিনি ফুটপাতে থাকতে শুরু করেন। মণীশকে যাঁরা উদ্ধার করেছিলেন, তাঁরা হলেন ক্রাইম ব্র্যাঞ্চের ডিএসপি বিজয় সিংহ ভাদোরিয়া ও রতনেশ সিংহ তোমর। তাঁরা মণীশের ব্যাচমেট ছিলেন।