নয়াদিল্লি ও চণ্ডীগড়: হরিয়ানায় ডেরা সচ্চা সৌদার ভক্তদের তাণ্ডবে ৩৬ জনের মৃত্যুর পরে পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার জেরে রাজ্য সরকারকে তীব্র ভর্তসনার পাশাপাশি গতকাল আদালতের তোপের মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট বলেছে, ‘উনি বিজেপির নন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী’।


আদলতে কেন্দ্রের প্রতিনিধি অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল সত্য পাল জৈনের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এভাবেই প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর কর্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিল আদালত। জৈন বলেন, গত শুক্রবারের হিংসার ঘটনা রাজ্যের ব্যাপার। তখন বিচারপতিরা প্রশ্ন তোলেন, ‘হরিয়ানা কি ভারতের মধ্যে পড়ে না? পঞ্জাব ও হরিয়ানার সঙ্গে সৎ-ছেলের মতো আচরণ করা হচ্ছে কেন?’ এর পরেই প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ওই মন্তব্য করেন তাঁরা’।

এর আগে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরেরও তীব্র সমালোচনা করে হাইকোর্ট। হাইকোর্টের কার্যনির্বাহী প্রধান বিচারপতি এস সিংহ শ্যারনের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ বলে, রাজনৈতিক ফায়দার কথা ভেবেই পাঁচকুলার মতো শহরে অশান্তির আগুন জ্বলতে দিয়েছে খট্টর সরকার। এটা ‘রাজনৈতিক আত্মসমর্পণ’।

ধর্ষণ মামলায় ডেরা-প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিংহ দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে গত শুক্রবার অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে হরিয়ানা। উপদ্রব শুরু করে রাম রহিমের ভক্তরা। অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর চলে নির্বিবাদে। এই ঘটনায় ৩৬ জনের মৃত্যু হয়। আঁচ পড়ে লাগোয়া চার রাজ্যেও।

রায় ঘোষণার আগেই পরিস্থিতি সম্পর্কে আশঙ্কা করা হয়েছিল। আশঙ্কা সত্ত্বেও ডেরার লক্ষ লক্ষ ভক্ত পাঁচকুলায় ভিড় জমিয়ে ছিল। ১৪৪ ধারা জারি সত্ত্বেও এত লোক কীভাবে আসতে পারল, ঘাঁটি গেড়ে বসে থাকতে পারল, সেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে খট্টার প্রশাসনকে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য খট্টর সরকারের তীব্র সমালোচনা করে হাইকোর্ট বলে, ‘আপনারা পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠতে দিয়েছেন। পরিস্থিতির কাছে আত্মসমপর্ণ করেছেন’।

পাঁচকুলার এক পুলিশ অফিসারকে বরখাস্ত করার ঘটনা নিয়েও হাইকোর্টের তোপের মুখে পড়ে খট্টর সরকার। বিচারপতিরা বলেন, ‘পাঁচকুলার এক ডিসিপি-কে বলির পাঁঠা করতে চাইছেন। কিন্তু যে রাজনৈতিক প্রভুরা ভুল নির্দেশ দিচ্ছিলেন, তাঁদের কী হবে?’