কুলু: হিমাচল প্রদেশের বহু জেলায় ঋতু নিয়ে এখনও চলছে অসংখ্য বাধানিষেধ। এ সময়ে মেয়েদের বাড়ির ভেতরে থাকতে দেওয়া হয় না, ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না বাথরুমও। সেই পরিস্থিতি থেকে মেয়েদের উদ্ধার করতে এগিয়ে এল কুলু জেলার প্রশাসন। স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠিয়ে এ ব্যাপারে তৃণমূল স্তরে কাজ শুরু করেছে তারা।

নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা স্থানীয় কর্মী সুভাষ মেন্ধাপুরকর অবশ্য এই সমস্ত পাহাড়ে ঘেরা দুর্গম এলাকায় ঋতু নিয়ে মানুষের সংকোচ ও অস্বস্তি ভাঙার ব্যাপারে চেষ্টা না করার জন্য সরকারকেই দোষ দিয়েছেন।

হিমাচলের বহু গ্রামে ঋতুর সময় গবাদি পশু ও পুরুষদের ছুঁতে পারেন না মহিলারা। বাড়িতে শুতে দেওয়া হয় না, থাকতে হয় আলাদাভাবে তৈরি ছাউনিতে, ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না বাথরুম। স্নানের জন্য মাইলের পর মাইল হেঁটে যেতে হয় তাঁদের। সন্তানজন্মের পর পর সদ্য প্রসূতিকেও দিনের পর দিন এই বিধিনিষেধ সহ্য করতে হয়।

এই পরিস্থিতিতে কুলু জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে, যাতে তাঁরা তৃণমূল স্তর থেকে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সাধারণ ধারণা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেন। এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে নারী সম্মান।

১ জানুয়ারি থেকে চালু হয়েছে এই প্রচার, চলবে ১ বছর ধরে। জেলায় এমন গ্রামের সংখ্যা ৯২, ৬ মাসের মধ্যে সবকটি গ্রামে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এছাড়াও কাংড়া, সিরমৌর ও কিন্নরের বহু দুর্গম গ্রামে এখনও এই প্রথা একইভাবে বিদ্যমান। কিছু গ্রামীণ সমাজ ধর্মীয় কারণে এ সব মেনে চলে, বাকিরা মানে, কারণ দুর্গম সেই সব এলাকায় অন্য মত বা পন্থা এখনও পৌঁছয়নি বলে। তবে এই প্রথা মূলত রয়েছে নির্দিষ্ট একটি জাতির মধ্যেই।

স্বাস্থ্যকর্মীরা গ্রামবাসীদের যেমন উন্মুক্ত স্থানে শৌচকর্ম না করার ব্যাপারে বোঝাবেন, তেমনই বোঝাবেন, যে ঋতুস্রাবের রক্ত বিষাক্ত কিছু নয়। সোলান, সিরমৌর, বিলাসপুর ও উনা জেলার বহু এলাকায় এই প্রথার ইতিমধ্যেই বিলুপ্তি ঘটেছে।