ভোপাল:  ভিন ধর্মে বিয়ে করায় ২৮ বছর ধরে সামাজিক বয়কটে বীতশ্রদ্ধ হয়ে মধ্যপ্রদেশের ছত্তরপুর জেলার এক হিন্দু পরিবার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করল।


রাজনগরের ফোটদার মহল্লার বাসিন্দা বিনোদ প্রকাশ খারে ২৮ বছর আগে এক মুসলিম মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের পর তাঁর স্ত্রীর নাম হয় বীনা। তাঁদের তিন সন্তান রয়েছে। দুই ছেলে আমন ও সুরজ, মেয়ে একতা। কিন্তু গ্রামবাসীরা এতদিন একঘরে করেই রেখেছিল বিনোদের পরিবারকে। গ্রাম কখনই তাঁর বিয়ে মেনে নেয়নি।

বিনোদ বলেছেন, ‘সমাজ এতদিন ধরে আমাদের লাঞ্ছিত, অপমানিত করেই এসেছে। গ্রামের কোনও বিয়ে বা অন্য কোনও অনুষ্ঠানে আমাদের ডাকা হত না’।

শুধু গ্রামবাসীরাই নয়, আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকেও এতদিন ধরে অবহেলাই পেয়ে এসেছেন বিনোদরা। তিনি বলেছেন, কোনও আত্মীয়র বাড়িতে বিয়ে হলে নিমন্ত্রণ করতে কেউ তাঁদের বাড়িতে ঢুকত না। দরজার সামনে নিমন্ত্রণপত্র ফেলেই কর্তব্য সারত আত্মীয়রা।

বিনোদের মেয়ে একতা এখন ফতিমা। তিনি বলেছেন, ‘দাদুর মৃত্যুর পরও শেষযাত্রায় বাবাকে শবদেহ বয়ে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি’। ফতিমা বলেছেন, ‘মামাদের সঙ্গে যাতে শান্তিতে জীবনযাপন করতে পারি, সেজন্যই ধর্মান্তরিত হয়েছি’।

গত ২১ আগস্ট বিনোদের পরিবার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। বিনোদের প্রশ্ন, ‘আমরা কি নিজের ইচ্ছে অনুসারে জীবনযাপন করতে পারি না? আমরা কি আমাদের পছন্দের কাউকে বিয়ে করতে পারি না?’

রাজনগরের এসডিএম রবীন্দ্র চৌকসে বলেছেন, এ বিষয়ে তিনি কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাননি বা ধর্ম পরিবর্তনের কোনও আগাম তথ্যও তিনি পাননি। কিন্তু খবর এসেছে যে, সামাজিক বয়কটে হতাশ হয়ে এক হিন্দু পরিবার স্বেচ্ছায় ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছে।

এখন অবশ্য হিন্দু সংগঠনগুলির নেতারা বিনোদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করছে আসছেন। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের স্থানীয় জেলা সভাপতি অনুপম গুপ্তা বলেছেন, ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তাদের সঙ্গে দেখাও করা হয়েছে। পারিবারিক কিছু সমস্যার জন্য ওই পরিবারকে ভুল পথে চালিত করা হয়েছে। সমস্যাগুলি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন গুপ্তা।