লখনউ: উত্তরপ্রদেশে পাসপোর্ট তৈরি করতে এসে হেনস্থার শিকার হিন্দু-মুসলিম দম্পতি। লখনউয়ের বাসিন্দা তনভি শেঠের পরিবারের সঙ্গে বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজনে পাসপোর্টের আবেদন করেছিলেন। গত ১৯ জুন তাঁর স্বামী আনস সিদ্দির সঙ্গে গিয়ে ফরম জমা দেন তনভি। পরের দিন পাসপোর্ট অফিসে তাঁদের ইন্টারভিউ-র জন্য ডাকা হয়। অভিযোগ, সেখানে তনভিকে বলা হয়, 'আপনার ক্ষেত্রে তো সমস্যা রয়েছে। আপনি মুসলিমকে বিয়ে করেছেন, তাহলে আপনার নাম তনভি শেঠ কীভাবে হতে পারে? নাম বদলে নেওয়া আপনার কর্তব্য'।
১২ বছর আগে ২০০৭-এ অনসকে ভালোবেসে বিয়ে করেছেন তনভি। অনসের পাসপোর্ট পুনর্নবীকরনের প্রয়োজন ছিল। তাঁর অভিযোগ, পাসপোর্ট বিভাগে বিকাশ মিশ্র নামে এক কর্মী তাঁকে ধর্ম বদল করতেও বলেন। তাঁকে হিন্দু হয়ে স্ত্রীর সঙ্গে সাতপাকের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথাও বলেন বিকাশ। অনসের দাবি, তনভি যখন তাঁর আবেদন নিয়ে বিকাশের কাছে যান, তখন তিনি জোরে চিত্কার করতে শুরু করেন।
তনভির ফরমে স্বামীর নাম মুসলিম দেখে বিকাশ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বলে অভিযোগ। সেখানে চিত্কার-চেঁচামেচি শুনে অনস পৌঁছে যান। অনসের দাবি, বিকাশ তাঁর সঙ্গেও ধমকের সুরে কথা বলেন। তিনি তনভিকে তাঁর নাম বদলাতেও বলেন।এরপর বিকাশ তনভির ফাইল অ্যাসিস্ট্যান্ট পাসপোর্ট অফিসে পাঠিয়ে দেন।
অনস ও তনভির দাবি, পাসপোর্ট অফিসের কেউই তাঁদের সাহায্য করেননি। পরে তাঁরা ট্যুইটের মাধ্যমে গতকালই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে জানান।





তাঁদের অভিযোগ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে গতকাল জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সচিব ডিএম মুলে। তাঁর ট্যুইট, 'এ ধরনের অসুবিধার জন্য দুঃখিত। লখনউয়ের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে এএ ব্যাপারে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে'।
বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে পাসপোর্ট অফিস তনভিকে পাসপোর্ট দিয়ে দিয়েছে। পাসপোর্ট অফিসার বলেছেন, পাসপোর্ট ও ধর্মের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। যা হয়েছে, তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।
লখনউয়ের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বিকাশ মিশ্রকে বদলি করা হয়েছে। অনস ও তনভিকে আস পাসপোর্ট অফিসে ডাকা হয়েছে। দুজনেই লখনউতে পড়াশোনা করেছেন। স্কুলে পড়ার থেকেই তাঁরা একে অপরকে জানতেন।